ঢাকা ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর বাড়িতে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল: সম্মানহানীর উদ্দেশ্যে প্রপাগাণ্ডা

সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর বাড়িতে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল: সম্মানহানীর উদ্দেশ্যে প্রপাগাণ্ডা

ভুতুড়ে বিলের কারণে সীমাহীন ভোগান্তিতে উপজেলার সাধারণ মানুষ সহ মন্ত্রী । উত্তরবঙ্গে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি নেসকোর ভুতুড়ে বিলে দিশেহারা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গ্রাহকরা।

তাদের অভিযোগ, মিটার না দেখে প্রতি মাসে খেয়ালখুশি মতো ইউনিট বসিয়ে দেন মিটার রিডাররা। বারবার অভিযোগ করার পরও কোনো ফল না পাওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিস থেকে বলা হয়েছে চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে এই বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এমন অবস্থায় উদ্বেগের মধ্যে আছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। তাঁর নামে একটি আবাসিক সংযোগ রয়েছে। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বিদ্যুৎ বিল দেখানো হয়েছে মাত্র ৩২ টাকা। এছাড়া কোনো মাসে ৭২ টাকা, আবার কোনো মাসে ৫২ টাকা এবং কোনো মাসে ১১১ টাকা বিল দেখানো হয়েছে। সর্বোচ্চ একটি বিল ২,৪০৮ টাকা দেখানো হয়েছে ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। যে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বিদ্যুৎ অফিসের অবহেলায় মন্ত্রীর হাতে পৌঁছায়নি । এর মধ্যে (গত ৩০ আগস্ট ‘মন্ত্রীর ছেলের নির্দেশে’ বিদ্যুৎ অফিসে হামলা, প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ তুলে, সংবাদমাধ্যমে মন্ত্রী পুত্রের বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূত বক্তব্য প্রদান করে ! নেসকোর নির্বাহী প্রোকৌশলী, পরে তার রেকর্ডেট বক্তব্য স্থানীয় গণমাধ্যম সহ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। এর পরক্ষণেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে নেসকো। নেসকো অফিসে হামলা -মন্ত্রীর ছেলের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় ওই প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আর এর যের ধরে গণমাধ্যমে মন্ত্রী বাড়ির ৩২ টাকা বিদ্যুৎ বিল দেখিয়ে সম্মানহানীর অনেক চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ১৩ মার্চ কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুহুল আমিন পেশায় একজন বিড়ি শ্রমিক। আকিজ কোম্পানীতে বিড়ি তৈরীর কাজ করে চলে তার জীবন। একদিন কাজ না করলে স্ত্রী, সন্তানের মুখে দুবেলা, দুমুঠো খাবার জুটে না তার। সন্তানের লেখাপড়ার জন্য বাড়িতে ২০১৫ সালে নিয়েছেন কালীগঞ্জ নেসকো লি: এর বিদ্যুৎ সংযোগ। বিড়ি তৈরীর কাজ করলেও নুরুল আমিন খেয়ে না খেয়ে প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছেন। নূরুল তার বাড়িতে মাত্র তিনটি বাল্ব ব্যবহার করে আসছিল এতেই তার প্রতিমাসে নেসকোর বিদ্যুৎ বিল আসতো ১০০/২০০/৩০০ ইউনিট করে। তবুও রুহুল আমিন কোনদিন অভিযোগ না করে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছিল। হঠাৎ ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে তার ব্যবহৃত বিদ্যুৎ ৪৮০০ ইউনিট ব্যবহার দেখিয়ে একটি ভুতুড়ে বিল দেন নেসকো কালীগঞ্জ। অথচ তার অক্টোবর /২০২২ এ নিয়মিত মিটার রিডিং ছিল ১১৯২০ ইউনিট। যার পরবর্তী নভেম্বর মাসে মিটার রিডিং ১৬৭২০ ও ব্যবহৃত ইউনিট ৪৮০০ দেখিয়ে বিড়ি শ্রমিক রুহুল আমিনকে বিল দেয়া হয় ৫৭ হাজার ৬শত ৫৫ টাকা। এ নিয়ে (১৪ মার্চ) কালীগঞ্জে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ,নেসকো অফিসের সামনে অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন, নেসকো,পিএলসি'র নির্বাহী প্রকৌশলী,সহকারী প্রকৌশলী ও মিটার পাঠক(পিচরেট)এর বিরুদ্ধে মিটার না দেখে অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল ও গ্রাহক হয়রানীর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে উপজেলার ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও সাধারন জনগন। গণমাধ্যম ভাইরাল- মন্ত্রী বাড়ির বিদ্যুৎ বিল।

হঠাৎ এমন বিল খবর আসার কারণ জানতে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির অফিসে যোগাযোগ করলেও, কোন সদুত্তর পাননি মন্ত্রী পরিবার।

এরপর বিভাগীয় অফিসে যোগাযোগ করা হলে রংপুর নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ বিল প্রস্তুত করতে কোনো গাফিলতি করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তারা খতিয়ে দেখবেন। জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে প্রতিটি অযৌক্তিক বিল স্থগিত করে দ্রুত প্রকৃত বিল পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন ভোক্তারা। এবং তারা এই বিভ্রান্তির পেছনে জড়িত সবার শাস্তিও দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

বিদ্যুৎ বিল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত