ঢাকা ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই : প্রধানমন্ত্রী

ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্থানীয় সময় বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর (যুক্তরাষ্ট্র সময়) ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, চলতি বছরের ২৪ মে বাংলাদেশে সুষ্ঠু, ও অবাধ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রক্রিয়াকে বাধাদানকারী ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর এই নতুন ভিসানীতির আলোকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা চালু করার পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র নিতে শুরু করেছে বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার এটাই প্রশ্ন যে হঠাৎ কথা নেই বার্তা নেই তারা আমাদের ওপর ভিসা স্যাংশন দিতে চাচ্ছে কী কারণে? আর মানবাধিকার বা ভোটের অধিকারের কথা যদি বলে, তাহলে আমরা আওয়ামী লীগ, আমরাই তো বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমাদের কত মানুষ রক্ত দিয়েছে এই ভোটের অধিকার আদায় করার জন্য। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়, তার জন্য যত রকমের সংস্কার, সেটা আমরাই তো করেছি—আজকে ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, মানুষকে ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার ভোট আমিই দেব যাকে খুশি তাকে দেব এই শ্লোগান আমার দেওয়া। এখন মানুষ ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। এমন পরিস্থিতিতে স্যাংশনে যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না।

র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী, আমাদের দেশের কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, সেটা র‍্যাব হোক, পুলিশ বা যেটাই হোক, কেউ যদি কোনো রকম অন্যায় করে, আমাদের দেশে কিন্তু তাদের বিচার হয়। এই বিচারে কিন্তু কেউ রেহাই পায় না। অনেক সময় কোনো কাজ তারা অতিরিক্ত করে, করতে পারে। কিন্তু করলে সেটা আমাদের দেশের আইনেই সেটার বিচার হচ্ছে। যেখানে এমন বিচার হচ্ছে, এ ধরনের ব্যবস্থা আছে, সেখানে এই স্যাংশনে কী কারণে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল, বাংলাদেশ কিন্তু বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন আর দুর্ভিক্ষ নেই, হাহাকার নেই। এমনকি আমাদের যে বেকারত্ব সেটাও কিন্তু কমিয়ে এখন মাত্র ৩%। সেটাও তারা কাজ করে খেতে পারেন। বাংলাদেশেই এখন অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে, তাই ভিসা স্যাংশনের ফলে যদি (বাংলাদেশিরা) আমেরিকায় (যুক্তরাষ্ট্রে) আসতে না পারে, আসবে না। তাতে কিছু যায় আসে না।”

সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস, আমেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশি বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো তার সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে গুমের ঘটনার যে অভিযোগগুলো করেছে, সে ব্যাপারে তার সরকারের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। সাক্ষাৎকারে সদ্য পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তারও জবাব দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিলেন। তিনি কিন্তু দেড় মাসও টিকতে পারেননি। ওই বছরের ৩০ মার্চ তাকে জনগণের রুদ্র রোষে পড়ে পদত্যাগ করতে হয়। আবার ২০০৬ সালে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা করেছিল। সেই ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন করে সে যখন সরকার গঠনের ঘোষণা দিলো... এরপর জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। সেই নির্বাচন বাতিল হয়ে গেল। কাজেই আমাদের দেশের মানুষ কিন্তু এখন ভোট সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। কাজেই একটা নির্বাচন সুষ্ঠু হবে— এটা তো আমাদেরই দাবি ছিল এবং আন্দোলন করে আমরাই সেটা প্রতিষ্ঠিত করেছি। তো আজ তারা স্যাংশন দিচ্ছে, আরও দেবে। দিতে পারে, এটা তাদের ইচ্ছা। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের যে অধিকার; তাদের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, তাদের বেঁচে থাকার অধিকার, তাদের শিক্ষা-দীক্ষার অধিকারসহ সব মৌলিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি।

নিষেধাজ্ঞা,যৌক্তিকতা,প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত