আবারও ক্ষমা পেলেন মেয়র জাহাঙ্গীর

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমা করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে।

শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।

জাহাঙ্গীর আলম বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে ক্ষমা প্রার্থীদের প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। সেই সূত্রে আপনার প্রতিও ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো। উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে কোনো প্রকার সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে, তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।’

২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তবে ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। পরে জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকেও বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তবে শর্তসাপেক্ষে চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাহাঙ্গীরকে দলে ফেরানো হয়।

চলতি বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন জাহাঙ্গীর। সেখানে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানকে বেছে নেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পরে দলের মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম কেনেন। পাশাপাশি মা জায়েদা খাতুনের নামেও পৃথকভাবে মনোনয়ন ফরম নেন তিনি। তবে ঋণখেলাপির জামিনদার হওয়ার কারণে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তার ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন জাহাঙ্গীর। সবশেষ গত ৪ মে জাহাঙ্গীরের আপিল খারিজ করে দেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম। এতে জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তই বহাল রয়ে যায়। এরপর ৭ মে প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গাজীপুরের সাবেক এই মেয়র হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। পরদিন ৮ মে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তার রিট আবেদনও খারিজ করে দেন।

ক্ষমা ঘোষণা করে দেয়া ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা, তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী সম্পৃক্ততার জন্য ইতিপূর্বে জাহাঙ্গীর আলমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হওয়ার বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দলের গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বিবেচিত হবে।