গাজীপুরে পোশাকশ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, নারী শ্রমিক নিহত

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:২৯ | অনলাইন সংস্করণ

পোশাকশ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক নারী নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

নিহত নারী শ্রমিক হলেন আঞ্জুয়ারা খাতুন। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলার চর নাটিপাড়া গ্রামের মো. জামাল হোসেনের স্ত্রী।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত আঞ্জুয়ারা কোনাবাড়ীর ইসলাম গার্মেন্টসে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গাজীপুরে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন বাড়ানোর আন্দোলন করছে। শ্রমিকদের আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা করার ঘোষণা দিয়েছে মজুরি বোর্ড। ঘোষিত নূন্যতম মজুরি প্রত্যাখান করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ি ও জরুনসহ আশপাশের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন।  এ ঘটনায় এক নারী ও পুরুষসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্য থেকে একজনের মৃত্যু হয়।

পুলিশ, আন্দোলনরত শ্রমিক ও এলাকাবাসী জানায়, কারখানা শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। মঙ্গলবার পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি বোর্ডের সভা শেষে ঘোষণা করা হয়। মজুরি বোর্ড ঘোষিত শ্রমিকদের বেতন প্রত্যাখান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শ্রমিকরা। প্রতিদিনের মতোই বুধবার সকাল থেকে কোনাবাড়ি এলাকার স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড, রিপন নিটওয়্যার লিমিটেড, ইসলাম গার্মেন্টস ও বেস্টঅল সোয়েটারসহ আরো কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করলে কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। 

গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আশরাফ উদ্দিন জানান, ‘শ্রমিকরা আঞ্চলিক সড়কগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখেন। ভাঙচুরও চালান। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আর নারী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি।’

তিনি আরও জানান, শ্রমিকদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উল্টো পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিয়ারসেল ছুড়লে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।