ঢিলেঢালাভাবে চলছে বিএনপির চতুর্থ দফার অবরোধ

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে সারাদেশে চতুর্থ দফায় দ্বিতীয় দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সড়কে মানুষের চাপ ও বাসে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। অফিস মুখো মানুষের চাপে কোথাও কোথাও যানজটও তৈরি হয়। 

আজ সোমবার ভোর থেকে সড়কে যানবাহন কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে। বাসের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশাতেও চাকরিজীবী ও কর্মজীবীরা তাদের গন্তব্যে যায়।

এর আগে, গতকাল সকালে রাজধানীর উত্তরা, বনানী, ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ীতে গণপরিবহন কম চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করেছে সড়কে।

সোমবার সকালে রাজধানীর নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, আসাদগেট ও মহাখালী এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়। এসব এলাকার অধিকাংশ বাস স্টপেজগুলোতেই যাত্রীরা সকাল থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঢাকা জেলার ভেতরে ও বাইরে চলাচল করা স্বল্প দূরত্বের মিনি বাসগুলো ছিল যাত্রীতে ঠাসা। 

অবরোধের কারণে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে টহল দিচ্ছে পুলিশ। যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে বাড়তি নজরদারি। সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারে ঢাকার আশপাশের জেলায়ও মোতায়েন করা রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য।

এদিকে অবরোধের সমর্থনে রাজধানীর মহাখালী, বনানী, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও সাভারের বলিয়ারপুরে বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার রাতে এসব ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে বনানীতে দগ্ধ একজনকে ভর্তি করা হয়েছে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে।

তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ নাজিমুদ্দিন সরকার জানিয়েছেন, রাত ৮টা ২০ মিনিটে মহাখালীর নাবিস্কো কারখানার সামনে শ্যামলী বাংলা পরিবহনের বাসে আগুনের খবর পাওয়া যায়। পরে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়া রাত ১০টার দিকে বনানীতে বাংলাদেশ বিমানের স্টাফ বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে মানিক দাস নামে একজন দগ্ধ হয়েছেন। তিনি বিমানের ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন। আবার রাজধানীর মুগদায় একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশের দিন থেকে ৯ নভেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত পর্যন্ত সারা দেশে মোট ১২৩টি যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১০টি এবং ৮ ও ৯ নভেম্বর মোট ১৩টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়।

তবে বিপত্তিতে রয়েছেন দূরপাল্লার বাসের পরিবহন শ্রমিক-চালকরা। অবরোধের আতঙ্কে পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাসস্ট্যান্ড থেকেই গাড়ি ছাড়তে পারছেন না তারা। এতে করে দৈনিক খরচ মেটাতে ও খাবার টাকা জোগাড় করতে ঋণও করতে হচ্ছে বলেও জানান তারা।