ঢাকা ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাহাড়ে যৌথ অভিযান 

কেএনএফের সাতজনসহ সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার আটক

৭ দেশি বন্দুক, ২০ রাউন্ড গুলি, কেএনএফের পোশাক উদ্ধার
কেএনএফের সাতজনসহ সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার আটক

বান্দরবানের পাহাড়ে যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই পর্যন্ত কেএনএফের সাতজন ও রুমা শাখার সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ারসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে। রুমা সেনা জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কেএম আরাফাত আমিন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এসময় ৭টি দেশি বন্দুক, ২০টি রাউন্ড গুলি, কেএনএফের পোশাক, ল্যাপটপ, একজোড়া বুট, ১টি ছুরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে কেএনএফের আরও দুই সদস্যসহ সন্দেহভাজন হিসেবে রুমা সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ারকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, রুমা-থানচিতে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের তান্ডবের ঘটনায় রুমা-থানচিতে ৮টি মামলা হয়েছে। তান্ডবের ঘটনায় জড়িতদের ধরতে সেনাবাহিনী-র‌্যাব-পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চলছে রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি ও আলীকদম উপজেলায়।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানান, থানচি থেকে একজন এবং রুমা থেকে ছয়জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। এর আগে সদরের শ্যারণ পাড়া থেকে কেএনএফের প্রধান সমন্বয়ককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে সেনাবাহিনী-র‌্যাব-পুলিশের পৃথক অভিযান এ পর্যন্ত আটজনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে কেএনএফ তান্ডবের ঘটনায় বান্দরবান জেলাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের সাজোয়াযানসহ বিভিন্ন ধরনের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

তিনি আরও বলেন, উপজেলাগুলোতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে চারটি সাঁজোয়া যান (এপিসি) আনা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আরও বাড়ানো হবে। চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় এসব সাঁজোয়া যানগুলো রুমা-থানচি উপজেলায় ব্যবহার করা হবে। অপরদিকে রুমা বাস মালিক সমিতির লাইনম্যান জাকির হোসেন জানান, সোমবার সকাল থেকে গণপরিবহনসহ অভ্যন্তরীণ সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিনা প্রয়োজনে বাড়ি থেকে কেউ বের হচ্ছে না।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেছেন, কেএনএফের সদস্যরা ব্যাংক ডাকাতি করতে আসার জন্য দুটি গাড়ি ব্যবহার করেছেন। ওই দুই গাড়ির একটি জব্দ ও চালক কফিল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ব্যাংক বন্ধ থাকায় বান্দরবান জেলা সদরে সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় গ্রাহকের ভিড় বেড়েছে। ভোগান্তিতে গ্রাহকরা।

এদিকে রোববার হেলিকপ্টারে বান্দরবান যান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়নে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন তিনি। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রেস ব্রিফিং করেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশে কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে কম্বাইন্ড অপারেশন শুরু হয়ে গেছে, এরই মধ্যে দুটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর অভিযান চলবে।

সেনাপ্রধান বলেন, শান্তি কমিটির সঙ্গে কেএনএফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আলোচনা চলছিল। দুটি মুখোমুখি সংলাপও অনুষ্ঠিত হয়েছে, তৃতীয় বৈঠকের আগেই তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটালো।

তিনি বলেন, বমদের সানডে আয়োজনে ৩১ মার্চ রুমায় বেতেলপাড়াসহ সবগুলো গির্জায় সেনাবাহিনী কেক পাঠিয়েছে। কিন্তু ২ এপ্রিল তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটালো। তাদের মনের ভেতর কী আছে সেটিতো জানা মুশকিল। তবে সরকার তাদের বিশ্বাস করেছিল, কিন্তু কেএনএফ বিশ্বাস রাখেনি। প্রসঙ্গতঃ রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা-ডাকাতি এবং ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণের ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতে প্রথম ভাগে ঘটলেও; থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে হামলা হয়েছে বুধবার ভরদুপুরে।

দুটি ঘটনাতেই পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ এর নাম এসেছে; যারা পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত। এরই মধ্যে ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ ছাড়া এ দুটি ঘটনায় মোট ছয়টি মামলা হয়েছে।

বান্দরবান
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত