ঢাকা ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জামালপুর কারাগারে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ: ৬ বন্দী নিহত, জেলারসহ আহত ১৯

জামালপুর কারাগারে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ: ৬ বন্দী নিহত, জেলারসহ আহত ১৯

জামালপুর জেলা কারাগারে বন্দিদের দুই পক্ষের বিক্ষোভ-সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কারাগারের জেলার, কারারক্ষী ও বন্দীসহ ১৯ জন আহত হয়েছেন। জেলারের কার্যালয়, হাসপাতাল, আটটি ওয়ার্ডে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বন্দীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে রাতে কারাগারের পরিস্থিতি পুরোটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, কোনো বন্দি পালাতে পারেনি।

শুক্রবার দুপুরে জামালপুর জেলা কারাগারের জেলার আবু ফাতাহ কারাগারের এ ঘটনায় সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন- মো. আরমান, মো. রায়হান, মো. শ্যামল, ফজলে রাব্বি ওরফে বাবু, মো. জসিম ও মোহাম্মদ রাহাত। তাঁদের সবার বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। নিহত ব্যক্তিরা ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সী।

শুক্রবার সকালে লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কারাগারের জেলার আবু ফাতাহসহ ১৪ জন কারারক্ষী ও ৫ জন বন্দী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন কারারক্ষী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, কারাগার থেকে ছয়জনের লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর কার কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

কারাধ্যক্ষ আবু ফাতাহ জানান, দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে কারাগারে বিদ্রোহ করা নিয়ে বন্দিদের মধ্যে দুইটি পক্ষ তৈরি হয়। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে কারাগারের ভেতরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

সংঘর্ষ ঠেকাতে গেলে বন্দিরা প্রথমে জেলারকে মারধর ও জিম্মি করে কারাগার থেকে বের হবার চেষ্টা করে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছুড়ে কারারক্ষীরা।

পরে বিক্ষুব্ধ বন্দিরা কারাগারের ভেতরের দুইটি ভবন, জেলারের কক্ষ ও প্রধান গেইটের ভেতরে একটি গেইট ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করে। বন্দিদের কাছে জিম্মি হয় ১৪ কারারক্ষী।

পরে কারাগার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। সন্ধ্যায় জিম্মি কারারক্ষীদের ফেরত দেয় বন্দিরা। রাত ৩টায় কারাগারের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

জেলার আবু ফাতাহ বলেন, সংঘর্ষে চলাকালে কারাগারে ১০ জন বন্দি আহত হন। তাদের মধ্যে পাঁচ জন কারাগারের ভেতরেই মারা যান, হাসপাতালে নেওয়ার পর আরেকজন মারা যান।

কারাগারের ক্ষতিগ্রস্ত ফটক ও ভেতরে অন্যান্য ভবন দ্রুত মেরামতের জন্য গণপূর্ত বিভাগ কাজ শুরু করেছে।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, জামালপুর জেলা কারাগারে বন্দি আছেন ৬৬৯ জন, তাদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন ১০০ জন। এছাড়া এই কারাগারে কোনো জঙ্গি কয়েদি নেই।

নিহত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত