টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে দেশের আট জেলা। এর মধ্যে ফেনী ও নোয়াখালীতেই বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা ২২ লাখেরও বেশি। সময় যতই বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ততই বাড়ছে। ফলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বানভাসী মানুষদের।
ইতোমধ্যে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ফেনীর সাড়ে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন জেলার বাসিন্দারা। এতে চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন্যার পানিতে জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। গো-খাদ্যের অভাবে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। রাস্তাঘাটের পাশাপাশি বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী জেলায় বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৭ ইউনিয়ন। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ২২ লাখ মানুষ। স্থাপন করা হয়েছে ৩৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র। যাতে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে ৮৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে ।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এসব উপজেলার বাসিন্দারা। ভেসে গেছে মাছের ঘের। ডুবে গেছে সড়ক, বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় দীর্ঘ সময়ের ব্যাপক জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নোয়াখালীবাসীর।
বন্যায় ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পানির তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। মুহুরি নদীর পানি বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু এলাকায় মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চাল ছুঁয়েছে বন্যার পানি। উদ্ধার কাজে নেমেছেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিজিবি।
এছাড়াও বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে পড়েছে চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, পটুয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ। সিলেটেও বাড়ছে নদীর পানি। ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা ঢলে ডুবেছে আখাউড়া স্থলবন্দর। প্রায় ৫২০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
আবা/এসআর/২৪