ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার সেনাপ্রধানের

যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার সেনাপ্রধানের

‘যাই ঘটুক না কেন’ যেকোনো পরিস্থিতিতে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। একই সাথে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে সে জন্য দেশে প্রধান প্রধান সংস্কার সম্পূর্ণ করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় তার কার্যালয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

রয়টার্সের সাথে এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান বলেন, নোবেল বিজেতা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং তিনি সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করার একটি পথনির্দেশনা তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, "আমি তার পাশে দাঁড়াব। যেভাবেই হোক। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।’ ইউনূস, যিনি গ্লোবাল মাইক্রোক্রেডিট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা, জানিয়েছেন যে তিনি বিচার ব্যবস্থা, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জরুরি সংস্কার বাস্তবায়ন করবেন, যা দেশটির ১৭০ মিলিয়ন মানুষের জন্য মুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত নির্বাচনের পথ খুলবে।

তিনি বলেন, সংস্কারের পর গণতন্ত্রে উত্তরণ এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে করা উচিত। তবে এই সময়ে ধৈর্যের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, “আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বলব— এই সময়সীমার মধ্যেই আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত।”

১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয়। তবে ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলে বাংলাদেশে সামরিক শাসন শুরু হয়। এরপর নানান চড়াই-উৎরাই পার হয়ে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন সামরিক শাসক হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।

তবে ২০০৭ সালে দেশে সেনা অভ্যুত্থান হয়। গঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। একে সমর্থন দেয় সেনাবাহিনী। ২০০৯ সালে হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত দুই বছর দেশ শাসন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

বাংলাদেশের এই পট-পরিবর্তনের পুরোটা সময় একজন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জেনারেল জামান। তিনি বললেন, তার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনৈতিকভাবে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। তিনি বলেন, আমি এমন কিছু করব না যা আমার প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর হয়। আমি একজন পেশাদার সৈনিক। আমি আমার সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখতে চাই।

সেনাপ্রধান জানান, হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশ ব্যাপক সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এসব সরকারি সংস্কারের সঙ্গে মিল রেখে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে অন্যায়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু সেনাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।

সামরিক বাহিনী বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে, যা সাধারণত প্রধানমন্ত্রী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। জামান জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি সাংবিধানিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় এই বিষয়টি সংশোধন করা হতে পারে। "একজন সৈনিককে রাজনীতিতে জড়িত হতে হবে না," তিনি যোগ করেন। সূত্র: রয়টার্স

আবা/এসআর/২৪

পরিস্থিতি,অঙ্গীকার,সেনাপ্রধান
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত