ঢাকা ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গুম কমিশনকে সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার

গুম কমিশনকে সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার

গুমবিষয়ক তদন্ত কমিশনকে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গুমের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত ও জবাবদিহির আওতায় আনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

বৈঠকে কমিশনের সদস্য ছাড়াও উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন এবং জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আপনাদের যা যা প্রয়োজন, সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।’

কমিশনের সদস্যরা জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সরকারকে তারা একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেবে এবং এর পর বিষয়টি নিয়ে আরও কাজ করবেন।

বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, সরকার প্রয়োজনে কমিশনের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়াবে এবং এজন্য প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করবে, যার মধ্যে ভুক্তভোগীদের সুরক্ষার জন্য আইনি বিধানের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তারা প্রায় ১ হাজার ৬০০ অভিযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ যাচাই করেছেন এবং ১৪০ অভিযোগকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

বৈঠকে কমিশনের এক সদস্য বলেন, অসংখ্য অভিযোগ পেয়ে আমরা অভিভূত। অনেক মানুষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা প্রতিশোধ নিতে পারে– এমন আশঙ্কা থেকে কমিশনে আসছেন না। এ থেকে বোঝা যায়, গুমের প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। তিনি বলেন, আমাদের সন্দেহ, গুমের সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০ হতে পারে। গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং যাদের নির্দেশে এসব ঘটনা ঘটেছে, তাদের শনাক্তে কাজ করছে কমিশন।

ওই সদস্য আরও বলেন, অনেক ভুক্তভোগী কারাগারে রয়েছেন। কিছু ভুক্তভোগী মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি। গ্রেপ্তার দেখানোর পর তাদের আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বেশ কিছু ভুক্তভোগী প্রতিবেশী ভারতের কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

কমিশনের সদস্যরা বলেন, সরকারকে এমন কিছু গোপন স্থানে প্রমাণ সংরক্ষণের জন্য সহায়তা করতে হবে, যেখানে ভুক্তভোগীদের আটকে রাখা হয়েছিল। অনেক ভুক্তভোগী আমাদের বলেছেন, তারা বছরের পর বছর সূর্যের আলো দেখেননি। প্রতিদিন নতুন দিন শুরু হয়েছে তা তারা কেবল সকালের নাশতা পরিবেশনের সময় টের পেতেন। সরকারকে অভিযুক্তদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সম্ভব হলে তাদের পাসপোর্ট বাতিলের অনুরোধ জানান তারা।

বৈঠকে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘কমিশনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের তালিকা পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম কমিশনের তদন্ত জনগণের সামনে তুলে ধরা এবং গুমের ঘটনাগুলোর তদারককারীদের প্রকাশ্যে আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বৈঠকে উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, নূরজাহান বেগম, আদিলুর রহমান খান, এম সাখাওয়াত হোসেন, নাহিদ ইসলাম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

গুম
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত