বেতন পেলেন শ্রমিকরা, শনিবার খুলবে কারখানা
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০:২১ | অনলাইন সংস্করণ
এবার সরকারের সহায়তায় টিএনজেড গ্রুপের ৫টি কারখানার ৩ হাজার ৬২০ জন শ্রমিক এবং ১২০ জন স্টাফের বকেয়া এক মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এতে খুশি শ্রমিকরা। তার আগে বেতনের দাবিতে টানা ৩ দিন গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন গ্রুপের পোশাক শ্রমিকরা। এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল।
কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে, যথারীতি শনিবার (১৬ নভেম্বর) থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দফায় শ্রমিকদের বকেয়া ৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। শনিবার থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে। আমি আশা করছি, শ্রমিকরা কাজে ফিরবেন এবং উৎপাদন শুরু করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়তা করবেন। আমরা বড় বিনিয়োগ করেছি এবং ব্যাংকের সুদ পরিশোধে আমাদের অর্থ সংকট হয়েছে। এক্সপোর্ট বিপ্ল আপ ফান্ড থেকে শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার চেষ্টাও করেছিলাম, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের সহায়তায় নির্ধারিত সময়ের আগেই গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বেতন বাবদ ৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। শ্রমিকরা কোনো কাজ না করেই এই অর্থ পেয়েছেন। আগামী কিস্তির অর্থও তারা কাজ ছাড়াই পাবেন।’
ব্যাংক লোন প্রাপ্তিতে জটিলতার অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাড়ে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছি। ব্যাংক ইন্টারেস্ট বাবদ দেড়শ কোটি টাকা পরিশোধ করেছি। ব্যাংক থেকে ৮ কোটি টাকার একটি লোন অনুমোদন করানো হলেও, টাকা না পাওয়ায় শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যা হয়।’
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রমিকদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে এ বেতন পরিশোধ করা হয়। এর ফলে শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বেতন পেয়ে কারখানার এক নারী শ্রমিক বলেন, ‘রোববারের মধ্যে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বেতন পেয়ে গেছি। আমাদের মালিকপক্ষ কথা দিয়ে কথা রেখেছে। আমরা সবাই খুশি।’
উল্লেখ্য, টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেসিক ক্লথিং লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ শ্রমিকের অক্টোবর ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বকেয়া ছিল। এ ছাড়া এক্সপো কার্টুন ও এমএনএস ইয়ার্ণ ডায়িং কারখানায় স্টাফদের বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট বকেয়া ছিল। এরপর ৯ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ভয়াবহ যানজট দেখা দেয় মহাসড়কে। সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন এবং পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়। টানা তিনদিনের বিক্ষোভের পর শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান ঘোষণা দেন যে, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে উদ্যোগ নেবে সরকার।