স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে উত্তেজনা অনুযায়ী বিজিবিকে সেই রকমই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, প্রস্তুতিও সেই রকমই। তিনি বলেন, কোনো সময় বিজিবি পিট দেখাবে না, বুক দেখাবে। বিজিবিকে বলা হয়েছে সীমান্তের কোনো ধরনের উত্তেজনায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের স্বাবলম্বীকরণে বিজিবির সহায়তা অনুষ্ঠান শেষে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, কোনো উসকানি আসলে প্রতিহত করতে হবে, ছাড় দেওয়া হবে না।
পঞ্চগড় সীমান্তে হত্যা ও সীমান্ত উত্তেজনা প্রসঙ্গ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা বিজিবিকে নির্দেশনা দিয়েছি যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি রাখার জন্য। বিজিবি সীমান্তে সব সময় প্রস্তুত থাকবে। তবে সীমান্তে ওই অর্থে সে ধরনের কোনো বড় উত্তেজনা নেই।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে উত্তেজনা অনুযায়ী বিজিবিকে সেই রকমই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে
তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী বাংলাদেশি নাগরিকদের বলবো উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা সবসময় প্রস্তুত। সীমান্তবর্তী নাগরিকরা সম্পূর্ণ নিরাপদ।
বিজিবিকে কী ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিজিবি অভ্যন্তরীণ ও সীমান্তে নিরাপত্তায় কাজ করবে। তবে অভ্যন্তরীণ কাজ কমিয়ে সীমান্তে মনোযোগ দিতে বলেছি। ভারত যদি সীমান্ত উত্তেজনা বাড়ায় তাহলে বিজিবির উদ্দেশ্যে আপনাদের নির্দেশনা কি থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারত একটা, ভারতের জনগণ অন্য বিষয়। ভারতের জনগণের উত্তেজনায় প্রতিকার করবে গণমাধ্যম, জনগণ আপনারা, আমরা। ওই রকমই নির্দেশনা রয়েছে, ওই রকমই নির্দেশা দেওয়া হয়েছে, প্রস্তুতিও সেই রকমই।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) আরও বলেন, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারাদেশে বিজিবি অত্যন্ত সহনশীল, মানবিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিজয় পরবর্তী সময়ে সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও যেকোনো সময়ের চেয়ে সাহসী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, থানাসমূহকে কার্যকর, রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, কল-কারখানা সচল রাখাসহ পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ দমনে বিজিবি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্র-জনতার বিজয় অর্জনকে সুসংহত করতে বিজিবি সীমান্তে জোরদার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে উত্তেজনা অনুযায়ী বিজিবিকে সেই রকমই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে
তিনি বলেন, তৎকালীন সরকারের প্রায় অর্ধশত বিতর্কিত ব্যক্তিকে সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টাকালে আটক করে আইনের হাতে সোপর্দ করেছে বিজিবি। নতুন প্রেক্ষাপটে বিজিবি দেশের সীমান্ত রক্ষায় জোরদার ভূমিকা পালন করে গত ৩ মাসে সীমান্তে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চোরাকারবারিদের আটক ও বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
র্যাব বিলুপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, বিজিবি সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ১০৭ জন ছাত্র-জনতাকে পুনর্বাসন করার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৭ জন যোদ্ধাকে সহযোগিতা করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে উত্তেজনা অনুযায়ী বিজিবিকে সেই রকমই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়া ছাড়াও এর আগে বিজিবির উদ্যোগে শহীদ আবু সাঈদ ফাউন্ডেশনে ৫ লাখ টাকা, জয়পুরহাটের শহীদ নজিবুল সরকার বিশাল এর পরিবারকে ৩ লাখ টাকা এবং রাজধানীর পপুলার হাসপাতালে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
সীমান্তে যেকোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে সবার ওপরে দেশ এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বিজিবির প্রতিটি সদস্য সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিজিবি মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট কবি, লেখক, গবেষক ও চিন্তক ফরহাদ মজাহার, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং মেজর আহমেদ ফেরদৌস (অব.) দেশ গঠনমূলক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন। বক্তারা জুলাই বিপ্লব ও বিজয় পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনমূলক বিভিন্ন কাজে বিজিবির ভূয়সী প্রশংসা করেন।