যেখানে যাত্রী বেশি, সেখানে রেল থামবে: রেল উপদেষ্টা
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৮ | অনলাইন সংস্করণ
অন্তর্বর্তী সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, যেখানে যাত্রী বেশি হবে, সেখানে রেল থামবে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা-খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করে তিনি এ কথা বলেন।
সাধারণ যাত্রীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সবাই আশা করেন যে, রেল গাড়িটি তাদের বাড়ির পাশে থামবে। আবার তারা এটাও চান, তারা দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাবেন। এটা সম্ভব না। আপনি যতই স্টপেজের সংখ্যা বাড়াবেন ততই যাতায়াতের সময় বাড়বে। এখন এমন একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, প্রত্যেক জায়গাতেই রেলস্টেশন করতে হবে। প্রত্যেক স্টেশনেই রেলগাড়ি থামাতে হবে। এটা একটা ভালো লক্ষণ নয়। যেখানে যাত্রী বেশি হবে সেখানেই গাড়ি থামবে। যেখানেই রাজস্ব পাওয়া যাবে, সেখানে রেলগাড়ি থামবে।
রেলওয়ে উপদেষ্টা বলেন, রেলওয়ে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। রেলকে তার আয় দিয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে হবে। সরকার সব খাতেই কিন্তু ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই ভর্তুকি আর কত দেওয়া যাবে? এজন্য আমাদের ব্যয় সাশ্রয়ী হতে হবে। ব্যয় সাশ্রয়ী হতে হবে আমাদের পরিকল্পনা, সাশ্রয়ী হতে হবে ব্যয়ে।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই জানেন রেল একটি সাশ্রয়ী যাতায়াত ব্যবস্থা। খুব অল্প খরচে এর মাধ্যমে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু আমাদের রেলের নানান রকম সংকট রয়েছে। আপনারা অনেকে অসন্তোষ ব্যক্ত করে থাকেন। আপনাদের জানতে হবে কেন আপনাদের কাঙ্ক্ষিত সুবিধা দিতে পারে না। আমাদের ইঞ্জিন সংকট রয়েছে, কোচের সংকট, জনবলের সংকট রয়েছে। সীমিত সংখ্যক জনবল দিয়ে রেলের কর্মীরা বড় দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি আরও বলেন, আজকের পদ্মা রেলসেতু সংযোগের মাধ্যমে খুলনা এবং ঢাকার মধ্যে একটা দ্রুত যাতায়াতের ব্যবস্থা হয়েছে। পৌনে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে খুলনায় পৌঁছে যাবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা, রেলের সর্বস্তরের কর্মচারীরা রেলের মহাপরিচালকসহ, বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। রেলের আজকের যে বর্তমান অবস্থা, এই অবস্থাতে আসার একটি কারণ হচ্ছে অপব্যয়। যত্রতত্র রেল স্টেশন বানানো হয়েছে, লাইন বিস্তার করা হয়েছে। কিন্তু ইঞ্জিন, কোচ, জনবল আছে কিনা সেগুলো না দেখে, এসব করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যেকোনো প্রকল্পের ব্যয় ভারতের তুলনায় করে আশেপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। রেলের যারা ইঞ্জিনিয়ার, রেলে যারা সেনাবাহিনী সহায়তা করেন, সবাইকে অনুরোধ করব কীভাবে এটার খরচ কমানো যায়। ব্যয় যদি কমানো না যায় তাহলে আমাদের রেল সেবা দেওয়ার প্রত্যাশা আমরা পূরণ করতে সক্ষম হবো না।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
এর আগে, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় খুলনা থেকে ৫৫৩ জন যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’। পরে পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছায় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে। অর্থাৎ, খুলনা থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
প্রসঙ্গত, সোমবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন ট্রেনটি চলাচল করবে। ট্রেনটি যাওয়া-আসার পথে যশোরের নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে।