ঢাকা ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে দেব না: সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে দেব না: সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, সেনাপ্রধান হিসেবে নিজের মেয়াদকালে আমি রাজনীতিতে নাক গলাব না। আমি সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে হস্তক্ষেপ করতে দেব না। এটাই আমার স্পষ্ট অঙ্গীকার।

সম্প্রতি সেনা সদরদপ্তরে দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করছি। তারা আমাদের কাছ থেকে যে ধরনের সহায়তা চাইছে, সেভাবেই সহায়তা দিচ্ছি এবং দেব। যে দিন অন্তর্বর্তী সরকার বলবে- আপনাদের অনেক ধন্যবাদ, আপনারা আপনাদের কাজটা সম্পন্ন করেছেন, এখন পুলিশ আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব নেবে। আমরা তখন সানন্দে সেনানিবাসে ফিরে যাব।

রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, রাজনীতিবিকদের বিকল্প রাজনীতিবিদেরাই। তাদের বিকল্প সেনাবাহিনী নয়।

যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যাক্ত করে সেনাপ্রধান বলেন, আমরা পুরোপুরি সরকারের পাশে রয়েছি। আমরা চেষ্টা করব প্রধান উপদেষ্টা যেভাবেই আমার বা আমাদের সাহায্য চাইবেন, আমরা সেভাবেই উনাকে সহযোগিতা করব। এটাতে যদি আমাদের অসুবিধা হয়, সৈনিকদের যদি সাময়িক অসুবিধাও হয়, তারপরও সরকারকে সহযোগিতা করে যাব। দেশ ও জাতির স্বার্থেই আমরা এটা করব। এই জাতির জন্য, দেশের জন্য ও দেশের মানুষের স্বার্থে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা তৈরি আছি।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরির গুরুত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আশাবাদী। রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে ভালো রাজনীতিবিদ রয়েছেন। হয়তো ভিন্নমতের মানুষও আছেন। আমার অতীত অভিজ্ঞতায় বলে, যখন এমন একটা ক্রান্তিকাল আসে, আমাদের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বসলে তারা সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসেন।

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে সমঝোতার ব্যাপারে আশাবাদী জেনারেল ওয়াকার উজ জামান বলেন, এখনও সমঝোতা সম্ভব। একসঙ্গে বসে এটা করা সম্ভব। এটা একটা সংস্কৃতির ব্যাপারও বটে। সবার এটা বোঝা উচিত। আমি নৈরাশ্যবাদী নই।

সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার ব্যাপারেও কথা বলেন সেনাপ্রধান। সশস্ত্রবাহিনীকে রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখার ব্যাপারে নিজের মনোভাবের কথাও জানান তিনি। এ ব্যাপারে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন,

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, আমি সংবিধান বিশেষজ্ঞ নই। নিজের অভিজ্ঞতার আলোকেই বুঝেছি, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা প্রয়োজন। সশস্ত্র বাহিনীকে রাষ্ট্রপতির অধীন রাখা যেতে পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সশস্ত্র বাহিনী প্রধান উপদেষ্টার অধীন ছিল। আমি এই ধারণার কথা বলছি। ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রসঙ্গটি নিয়ে ভাবছি। কীভাবে সেটা হতে পারে, বিশেষজ্ঞরা বললেই ভালো। কিন্তু এই পরিবর্তন আনতে পারলে শাসনব্যবস্থায় একটা ভারসাম্য আসবে।

সেনাবাহিনী,সেনা সদরদপ্তর,প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত