ঢাকার গণপরিবহনকে শৃঙ্খলিত করতে ২০১৫ সালে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের উদ্যোগে বাস রুট রেশনালাইজেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ব স্বীকৃত এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও বাস মালিকদের অসহযোগিতা ও কমিটির পরিবর্তন প্রকল্পের বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) বর্তমানে বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজিং প্রকল্পকে সফল করতে নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। নতুন এই উদ্যোগে কোম্পানিভিত্তিক বাস সেবা প্রবর্তনের মাধ্যমে পুরো রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থাকে এককভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ডিটিসিএর প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাস রুটগুলো বিভিন্ন রঙ ও নামের কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত হবে। মেরুন, অরেঞ্জ, ব্লু, পিংক, গ্রিন, নর্থ, নর্থওয়েস্ট, ভায়োলেট, এবং সাউথ নামে এসব কোম্পানি নির্দিষ্ট রুটে বাস পরিচালনা করবে। প্রতিটি কোম্পানি নির্দিষ্ট সংখ্যক বাস নিয়ে নির্ধারিত রুটে যাত্রী পরিবহন করবে।
বাস মালিকদের রাজনৈতিক প্রভাব এবং লক্করঝক্কর বাস মালিকদের সিন্ডিকেট বাস রুট রেশনালাইজেশনের পথে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতীতের সরকার আমলে পরিবহন মালিক সমিতি এ প্রকল্পে বাধা দিয়েছে। তবে বর্তমানে পরিবহন মালিকরা এই উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন।
নতুন পরিকল্পনায় টিকিটবিহীন বাস চলাচল বন্ধ, যাত্রীসেবার মান উন্নয়ন, র্যাপিড পাস পদ্ধতির প্রবর্তন, চালক ও সহকারীদের বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ, রুট পারমিট কোম্পানির আওতায় আনা, এবং আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের স্থাপনার মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ডিটিসিএ সূত্রে জানা গেছে, ৮০টি বেসরকারি কোম্পানি ইতোমধ্যে ২ হাজারের বেশি বাস দিয়ে আবেদন করেছে। নতুন ঢাকা নগর পরিবহন মার্চ মাস থেকে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ডিটিসিএ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক নজরুল ইসলাম জানান, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সব কোম্পানিকে এককভাবে নগর পরিবহন আওতায় নিয়ে আসা হবে। বাসগুলোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে ক্যামেরা এবং টিকিট কাউন্টার স্থাপন করা হবে।
এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি আসবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।