আগামী মার্চ মাস থেকে আমদানি ও রপ্তানির সব কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ)-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা জানান।
অর্থ উপদেষ্টা আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম সহজের উদ্যোগের কথা জানিয়ে বলেন, আজ আংশিকভাবে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) চালু হয়েছে। বিএসডব্লিউ চালুর মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম আরও সহজ করতে সাতটি কাস্টমস এজেন্সিকে একক প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আরও ১২টি সংস্থাকে এই প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনা হবে। ফলে, মার্চ মাস থেকে পুরো সিস্টেমটি পেপারলেস হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির পর থেকে আমদানি ও রপ্তানি সংশ্লিষ্ট ১৯টি ডিপার্টমেন্টের যত ধরনের লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয় আছে এতে কোনো ম্যানুয়াল পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে না, সব অনলাইনে করতে হবে। অন্যথায় আমাদের হাতেও ইন্সট্রুমেন্ট আছে। আমাদের অর্থসচিব অনলাইনে আবেদন না হলে সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের বরাদ্দ আটকে দেবেন।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, গত ১৫ বছরে ডিজিটাল করতে অনেক টাকা ব্যয় করা হলেও তা ফলপ্রস্যু হয়নি। আমাদেরকে ডিজিটালের গল্প শোনানো হয়েছে শুধু। যাত্রাবাড়ী থানা পুড়ে গেল, কোনো ব্যাকআপ ডকুমেন্ট রইলো না। আমরা কার্যকর ডিজিটাল দেশ গড়তে অর্থায়ন করব।
এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমাদের ডিজিটালের গুরুত্ব উপলব্ধি করিয়েছে। সব নথি পুড়ে গেলেও কোনো ব্যাকআপ ছিল না। অথচ বলা হয়েছিল দেশ ডিজিটাল হয়ে গেছে।"
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে এসেছি স্মার্ট বাংলাদেশ হয়েছে, আমরা উন্নয়নের হাইওয়েতে প্রবেশ করেছি। এ ধরনের অনেক নেগেটিভ তৈরি হয়েছে। অথচ একটি থানার কাগজ পুড়ে গেলে অনলাইন না থাকায় তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে বিএসডব্লিউ-এর আওতায় এসেছে সাতটি সংস্থা। সেগুলো হলো পরিবেশ অধিদপ্তর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি ১২টি সংস্থাকে বিএসডব্লিউ-এর আওতায় আনা হবে। এর ফলে পুরো সিস্টেমটি সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।
আরও জানানো হয়, ওই সাতটি সংস্থা ইতোমধ্যে তাদের অটোমেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইনে আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত সকল প্রকার শংসাপত্র, লাইসেন্স এবং পারমিট পেতে পারবেন। ফলে, কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য আর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।