ডেঙ্গু রোগের নতুন পরিস্থিতি: সজাগ থাকার প্রয়োজনীয়তা
ডেঙ্গু, মশাবাহিত একটি মারাত্মক রোগ, বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্য সেক্টরে নতুন এক সংকট তৈরি করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের স্বাস্থ্য খাতে আবারও একটি শোকাবহ ঘটনা ঘটেছে। ২০২৫ সালে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, একই সময়ের মধ্যে নতুন করে ৫৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
২০২৫ সালের প্রথম ডেঙ্গু মৃত্যুর খবর উদ্বেগজনক। গত শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৮টা পর্যন্ত সারা দেশে মোট ৫৬ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২১ জন ঢাকার হাসপাতালগুলোতে, ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগে, ১০ জন ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন এলাকায়, ৯ জন বরিশাল বিভাগে, ২ জন খুলনা বিভাগে, এবং ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ২২১ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে ২১৬ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে।
যেহেতু ডেঙ্গু এখন আর শুধুমাত্র একটি সিজনাল রোগ নয়, বরং সারা বছরব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে, তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান সতর্ক করেছেন যে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে শুধু মশাবাহিত ওষুধ ব্যবহার করলেই হবে না, বরং সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনকে সারা বছর প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। এর পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন থাকতে হবে এবং ঘরের আশেপাশে মশার প্রজনন স্থান নির্মূল করতে হবে।
গত বছর, ২০২৪ সালে, ডেঙ্গুর কারণে দেশে ৫৭৫ জনের মৃত্যু এবং এক লাখ ১২ হাজার ১৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। দেশটির ইতিহাসে ২০২৩ সালেই ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ—৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুতে দেশটি একটি অন্ধকার অধ্যায় পার করেছে।
এ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের উচিত, ডেঙ্গু মোকাবেলায় একটি কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা। শুধু সরকারি উদ্যোগ নয়, প্রত্যেক নাগরিককেও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের ছোট ছোট পদক্ষেপই বৃহত্তর পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।