জাপান, মালয়েশিয়া ও ভারতের পর এবার বাংলাদেশেও হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকার এক নারী, যিনি বর্তমানে রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন জানান, ‘এইচএমপিভি কোনো নতুন ভাইরাস নয়। বাংলাদেশে এর উপস্থিতি আগেও শনাক্ত হয়েছে। সুতরাং এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শনিবার আমরা একজনের দেহে এইচএমপিভি সংক্রমণের রিপোর্ট পেয়েছি। তিনি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত। তবে আক্রান্ত রোগীর কোনো বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই, যা নির্দেশ করে যে তিনি দেশেই সংক্রমিত হয়েছেন।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই বিদ্যমান এবং প্রতিবছরই কিছু রোগী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তবে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি বা প্রতিরোধী ভ্যাকসিন নেই। রোগের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসাই এর একমাত্র উপায়।
চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এইচএমপিভি সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপান, মালয়েশিয়া ও ভারতেও এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, ২০০১ সালে বিশ্বে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাস সম্ভবত আরও অনেক আগেই পৃথিবীতে বিদ্যমান ছিল। কেউ কেউ মনে করেন, ১৯৫৮ সাল থেকেই এই রোগের অস্তিত্ব রয়েছে।
এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হলে ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো অসুখ হতে পারে। বিশেষত শিশু, বয়স্ক এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রভাব বেশি দেখা যায়। তবে বাংলাদেশের মানুষ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যা এই ভাইরাস নিয়ে বাড়তি ভয় কমিয়ে দেয়।