বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার গণঅভ্যুত্থানের সময় আমাদের কিনতে পারেনি। এখন যারা ভাবছেন সংসদের কিছু চেয়ার দিয়ে ছাত্রদের কিনে ক্ষমতা দখল করবেন, তারা ভুল ভাবছেন।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ সড়কের পৌর মুক্তমঞ্চ মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘রাইজিং চুয়াডাঙ্গা’ শীর্ষক ছাত্র-জনতার মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যতদিন আমরা রাজপথে রয়েছি, ততদিন আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার যে চিন্তা রয়েছে, তা সফল হতে দেব না। আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে থাকবে কি থাকবে না, সে বিষয়টি পরে আলোচনা হবে। কিন্তু তার আগে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই প্রশাসনের সংস্কার, বিচারব্যবস্থার সংস্কার এবং নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার। এই সংস্কারের মাধ্যমে আমাদের দেশকে গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
কোটাবিরোধী আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, তরুণ প্রজন্মকে কোনো লোভ দেখিয়ে কিনে ফেলা যাবে না। তরুণদের ভাষা বুঝতে হবে এবং তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। তাদের শক্তি এবং সৎ আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনেই দেশের আগামী দিনগুলোর পরিবর্তন সম্ভব।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি এই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটা রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা তৈরি হচ্ছে। আমরা দেখেছি আমাদের প্রবীণ যে নেতৃত্ব রয়েছে, এই প্রবীণ নেতৃত্ব আমাদের তরুণ প্রজন্মের ভাষা বুঝতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের তরুণদের মনুষত্ব বুঝতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের তরুণদের কথা তারা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের তরুণদের চিন্তা এবং চেতনার সঙ্গে, আমাদের মনস্তত্ত্বের সঙ্গে তাদের যোজন যোজনের দূরত্ব রয়েছে। প্রবীণরা যেখানে চিন্তা করে মোবাইল চালানোই হচ্ছে ধ্বংসের কারিগর, আমরা দেখেছি এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই আমাদের এই যে গণঅভ্যুত্থানের জোট তৈরি হয়েছিল।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের প্রবীণ রাজনীতিবিদরা তারা ছিলেন আপসকালীন। আমরা দেখেছি আমাদের কাছে খবর আছে, কারা কারা তিনটা নির্বাচনে শেখ হাসিনার সঙ্গে আপস করেছে। কাদের সঙ্গে খুনি শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। কাদের কাদের সঙ্গে খুনি শেখ হাসিনা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। এই জিনিসগুলো কিন্তু আমাদের জানা রয়েছে। সুতরাং আপনারা যারা আওয়ামী লীগের বিচার বাদ দিয়ে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের জন্য চিন্তা করছেন, আপনারা এই তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে আপনারা দালালি করছেন।
রাজনীতিবিদদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ক্ষমতামুখী হওয়ার পরিণতি ভালো হয় না, এরই মধ্যে এমন শক্তি আছে যারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। জনতার জন্য কাজ করলে, জনতাই আপনাদের সমর্থন করবে। আমরা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিপক্ষে, কিন্তু আমরা রাজনৈতিক বিভাজনে যেতে চাই না। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।
বিদেশি ফাঁদে পা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরেও দেশে ষড়যন্ত্র চলছে। এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই, বিশেষ করে বিদেশে বসে এই ষড়যন্ত্র পরিচালিত হচ্ছে। তাই আমাদের অবশ্যই বিদেশি ফাঁদে পা দেওয়া থেকে সাবধান থাকতে হবে।
আবা/এসআর/২৫