'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ' এর সাথে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের নেতৃবৃন্দের একটি মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার ঢাকার রমনায় আইইবি’র সেমিনার হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ২৫টি ক্যাডারের সভাপতি-সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রচলিত আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সিভিল সার্ভিসের কার্যকর সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা। প্রতিটি সেক্টরে নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা, যারা সেই সেক্টর সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। তাছাড়া সকল সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও বৈষম্য রাষ্ট্রের সকল সেক্টরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারও যথাযথ কাজ করতে পারছেন না বলে মিডিয়াতে প্রচার হচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বার বার সময় নিলেও কোনো কাজ করছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিস হতে আলাদা করতে চাওয়ায় জনমনে নতুন সন্দেহের উদ্রেক করেছে। অথচ আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ বা পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সাথে আলোচনা না করে এবং বার বার সময় বাড়িয়ে কালক্ষেপণ করছে, যা জনমনে সংস্কার নিয়ে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত, মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল গঠনের বিকল্প নেই । কোটামুক্ত সেবামূলক মেধাবী সিভিল প্রশাসন বাস্তবায়ন না হলে, জুলাইয়ের রক্ত বৃথা যাবে - যা হতে দিবেনা পরিষদ। এছাড়া, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির জন্য ২৫ ক্যাডারের বারো জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত, একজনকে ওএসডি করা হয়েছে এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান। অথচ, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরকারি বিধি-বিধান বহির্ভূত কার্যকলাপের পরও তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক এরূপ অন্যায় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় এবং এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। আসামিই বিচারক হওয়ায় এমন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
সভায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেগুলো হলো- প্রত্যেকটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে সাক্ষাৎ করে সাময়িক বরখাস্ত, ওএসডি ও বিভাগীয় ব্যবস্থার বিষয়ে অবহিত করবে, সকল ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন যৌথ বিবৃতি দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের পক্ষপাতিত্বপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদ করবে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারের সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
—প্রেস বিজ্ঞপ্তি