জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ বলেছেন, বিভিন্নভাবে সংস্কারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। বাইরে থেকে হচ্ছে, ভেতর থেকেও হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, যারা মনে করে, বর্তমান কাঠামো অব্যাহত রাখা দরকার। বিশেষ করে যারা পরাজিত শক্তি, তারা এটা মনে করে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নাগরিকদের অংশগ্রহণ, চাপ ও অন্তর্ভুক্তি ছাড়া কোনোভাবেই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর পর নাগরিকদেরও মতামত নেওয়া হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সহসভাপতি বলেন, যে অভাবনীয় রক্তপাতের মধ্য দিয়ে এ জায়গায় এসেছি, সেখান থেকে খালি হাতে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্বল ও ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠানগুলোকে গত ১৬ বছরের ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসন ধ্বংস করে দিয়েছে। সংস্কারের প্রশ্ন উঠেছে সে কারণেই।
আলী রীয়াজ বলেন, বিচার বিভাগ কার্যত ধ্বংস করে দিয়েছে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন দরকার। জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরি করা না গেলে নির্বাচন হলেও আগের পরিস্থিতি হবে। তাই কাঠামোগত সংস্কারের আর কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান কাঠামোগত ব্যবস্থায় স্বৈরতন্ত্রের মোকাবিলা করা যাবে না।
সব কমিশন স্বাধীন সুপারিশ করেছে জানিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের এই প্রধান বলেন, রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে এটি চূড়ান্ত হবে। আর বিদ্যমান সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকলেও বিভিন্ন সময় সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে। বহুত্ববাদ সবার প্রতিনিধিত্ব করবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকলেও রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করেনি। এর একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা আছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্যরা সব বিষয়ে ঐকমত্য হলেও রাষ্ট্রধর্ম রাখার বিষয়ে সবাই একমত হননি।
অনুষ্ঠানে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, ঢাবির সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ সাহান, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।