ট্রলার ও স্পিডবোটের ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার অবসান ঘটিয়ে সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে চালু হলো চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ সমুদ্রপথে ফেরি চলাচল সার্ভিস। এর মাধ্যমে যোগাযোগ ও জীবনযাত্রায় নতুন দিগন্তের সূচনা হলো দ্বীপবাসীর জন্য।
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ঘাটে এই ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন। এরপর সকাল ৯টায় বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে ২০টি যানবাহন ও উপদেষ্টাদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম ফেরি ছেড়ে যায় সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ার উদ্দেশে। প্রায় এক ঘণ্টা ১৬ মিনিট যাত্রার পর ফেরিটি গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্যে বলেন, সন্দ্বীপ দেশের অন্যতম উপকূলীয় দ্বীপ। কিন্তু ৫০ বছরের মধ্যে কেন নিরাপদ যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি, কী লজ্জার কথা! সন্দ্বীপের মানুষ এতদিন কাদা মাড়িয়ে ডিঙি নৌকা আর বোটে করে সমুদ্র পারাপার করতে হয়েছে। সন্দ্বীপের সাথে আজ নিরাপদ যোগাযোগ স্থাপিত হলো। কেন এতদিন হয়নি, সেটা লজ্জার। এ লজ্জা থেকে বাঁচলাম। কলঙ্ক থেকে আজ মুক্ত হলাম।
ড. ইউনূস বলেন, শুধু সন্দ্বীপের জন্য না পুরো চট্টগ্রামের জন্য আজ আনন্দের দিন। স্বাধীনতার মাসে আপনাদের এ সুখবর দিতে পেরে আমি আনন্দিত। সন্দ্বীপের এ অগ্রযাত্রা আজ শুরু হলো, আরও সুন্দর হবে। এভাবে সব অঞ্চলের সুষম উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে, এটাই প্রত্যাশা।
সমাবেশে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই ফলপ্রসূ হবে না যদি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ উন্নত না হয়। এখানে ফেরি চলাচলের আগে নৌঘাট দখলমুক্ত করতে হয়েছে। সমুদ্র উপকূল হওয়ায় ফেরি চালু করা দুরূহ ছিল। দুটি ঘাটের নাম কাল থেকে জুলাই আন্দোলনে সন্দ্বীপের শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকত ও সাইমুন হোসেন মাহিনের নামে নামকরণের প্রস্তাব করছি।
এদিকে এই ফেরি সার্ভিস সমুদ্রপথে দেশে প্রথম এবং সন্দ্বীপবাসীর স্বপ্নপূরণ বলে আখ্যায়িত করছেন চট্টগ্রামের বিআইডব্লিউটিএ এর উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান।
ফেরিতে যাতায়াতের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে- সাধারণ যাত্রী ১০০ টাকা, মোটরসাইকেল ২০০ টাকা, সিএনজি অটোরিকশা ৫০০ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়ি ৯০০ টাকা, বাস ৩ হাজার ৩০০ টাকা, ট্রাক ৩ হাজার ৩৫০ টাকা, ১০ চাকার গাড়ি ৭ হাজার ১০০ টাকা। ফেরি ও বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্বীপবাসীর জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মো. কামরুজ্জামান।
আবা/এসআর/২৫