ঢাকা বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে বাংলাদেশের দৃষ্টি যেসব ক্ষেত্রে

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে বাংলাদেশের দৃষ্টি যেসব ক্ষেত্রে

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিক সফর করেছিলেন চীনে। এবার সেই দেশেই প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী ২৬ মার্চ শুরু হচ্ছে তার চার দিনের চীন সফর।

কূটনৈতিক ভারসাম্যের প্রচেষ্টা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফর বাংলাদেশের কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আওয়ামী লীগ সরকারের ভারত-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সমালোচনা থাকলেও চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্কও বরাবরই শক্তিশালী ছিল। তবে নতুন সরকারের অধীনে এই সম্পর্ক নতুন গতি পেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সফরের তৃতীয় দিন ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুহাম্মদ ইউনূস। ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এই সফরকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে একটি 'মাইলফলক' বলে উল্লেখ করেছেন।

অর্থনৈতিক দিক ও বিনিয়োগ

অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় চীনের সহযোগিতা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়টি সফরের আলোচ্যসূচিতে থাকবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, সফরে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি না হলেও বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। এছাড়া, ঋণের শর্ত সহজীকরণ এবং সুদের হার কমানোর অনুরোধ জানানো হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা বজায় রাখা এবং আমদানির ক্ষেত্রে ডেফার্ড পেমেন্ট সুবিধা পাওয়ার বিষয়টিও আলোচনার মধ্যে থাকতে পারে।

ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব

এই সফরকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় চীন-ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনীতির আলোকে মূল্যায়ন করছেন। ভারতের সঙ্গে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের উত্তেজনামূলক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের এই কৌশলগত অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাখাইনে আরাকান আর্মির অগ্রযাত্রার ফলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিবর্তন সফরের আলোচনায় স্থান পেতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সফরের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা। সফর শেষে ২৯ মার্চ দেশে ফিরবেন মুহাম্মদ ইউনূস।

অর্থনৈতিক,কূটনৈতিক,সফর,চীন,প্রধান উপদেষ্টা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত