বাংলাদেশে ২০১৮ সালের পর দীর্ঘ সাত বছরের মাথায় ফের বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। যশোর সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। এতে খামারের দুই হাজার ৭৮টি মুরগি মেরে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
গত ১২ মার্চ খামারে মুরগি মারা যাওয়ায় নমুনা ঢাকার ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ হলে ১৩ মার্চ খামারের ছয়টি শেডের দুই সহস্রাধিক মুরগি মেরে পুঁতে ফেলা হয়। একইসঙ্গে শেড খালি করে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
বুধবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দেশের প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
বিপিএ’র সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, পোল্ট্রি খাত বর্তমানে গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি যশোরে একটি খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হওয়ার পর, দেশের পোল্ট্রি শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ওই খামারে তিন হাজার ৯৭৮টি মুরগির মধ্যে এক হাজার ৯০০টি মারা গেছে এবং বাকি মুরগি মেরে ফেলা হয়েছে। অতীতে আমরা দেখেছি, বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের কারণে বহু খামার বন্ধ হয়ে গেছে। লাখ লাখ মুরগি নিধন করতে হয়েছে এবং হাজার হাজার খামারি তাদের জীবিকা হারিয়েছেন।
এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল ইসলাম বলেন, গত ১৩ মার্চ ল্যাব টেস্টের রিপোর্ট পাওয়ার পর খামারের ছয়টি শেডের দুই হাজার ৭৮টি মুরগি মেরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে খামারে কোনো মুরগি নেই। শেডগুলো খালি করে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। খামারিদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি খামারের বাইরে ময়লা ফেলার জায়গা আছে। এছাড়া খামারে পাখির আনাগোনা থাকে। এসব মাধ্যমে বার্ড ফ্লু ভাইরাস ছড়াতে পারে। তবে নিশ্চিত নই কোন মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। কোনো খামারে মুরগি মারা গেলে ল্যাব টেস্টে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেন, গত ১২ মার্চ যশোরের সরকারি খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। আমরা যে নমুনা পেয়েছি তা পরীক্ষার জন্য দেশের বাইরে পাঠাবো। তবে মৃদু আকারের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি পোলট্রি খামারকে নির্দেশনা দিয়েছি। একইসঙ্গে পোলট্রি খামারিদের সংগঠনকেও সতর্ক থাকতে বলেছি। যাতে তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, ভ্যাকসিন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিশ্চিত করেন।
আবা/এসআর/২৫