সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। অগ্রগতি সন্তোষজনক না হওয়া এবং এসব অঞ্চল ‘অপ্রয়োজনীয়’ বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেজা ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বেজার গভর্নিং বডির দীর্ঘ পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে চৌধুরী আশিক বলেন, “১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রয়োজন নেই। বাস্তবতা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। বর্তমানে যেগুলো আছে সেগুলোকেই ফলপ্রসূ করতে হবে।”
বর্তমানে দেশে ১৯টি সরকারি ও বেসরকারি ইকোনমিক জোনে কাজ চলছে। ৭২০০ একর জমিতে নির্মাণ ও উৎপাদন পর্যায়ে রয়েছে ১২২টি কোম্পানি। এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার কর্মসংস্থান এবং ২১২টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এসব জোনে বিনিয়োগ করেছে।
নতুন সরকারের পর ৭ জানুয়ারি বেজা জানায়, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেবল পাঁচটি জোনে কাজ চলবে। আগামী ১০ বছরে ১০টি অঞ্চল উন্নয়নের লক্ষ্যকে যথেষ্ট মনে করছে বর্তমান প্রশাসন।
চৌধুরী আশিক জানান, "বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট পোর্টালের মাধ্যমে সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ওয়ান-স্টপ সার্ভিসে এখনো অনেক কিছু ম্যানুয়ালি চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে যেসব সেবা ডিজিটালে আছে, সেগুলোতে ম্যানুয়াল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।” এজন্য নতুন সফটওয়্যার ডেভেলপ করা হবে।
বোর্ড সভায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরকে আরও সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত হয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে বে টার্মিনাল উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আশা করা হচ্ছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর ঘিরে একটি ফ্রি ট্রেড জোন প্রতিষ্ঠারও পরিকল্পনা রয়েছে।
সম্প্রতি ভারত বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে। এ বিষয়ে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা এটিকে সুযোগ হিসেবে দেখছি। এতে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানোর পথ খুলবে। বিমানবন্দরগুলো আরও কার্যকর করে তুলতে হবে, যাতে বিদেশে পণ্য পাঠাতে খরচ কমে আসে।”
বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে (FDI) প্রবাসীদের মধ্যস্থতাকে উৎসাহিত করতে প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। “যেমন রেমিট্যান্সে ২.৫% প্রণোদনা দিই, তেমনি বিনিয়োগ আনলে সেক্ষেত্রেও প্রণোদনার বিষয়টি বিবেচনায় আছে।”
চৌধুরী আশিক জানান, বেজা, বিডা, পিপিপি এবং বেপজার গভর্নিং বডির সভাগুলো গত ৫-৬ বছর ধরে নিয়মিত হয়নি। “এটা সঠিক নয়। তিন মাস অন্তর অন্তর এসব বৈঠক হওয়া উচিত। আগামী মাসেও সভা হবে,” বলেন তিনি।