অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার বিদেশি সহায়তা হ্রাস করায় বিদ্যমান রোহিঙ্গা সংকট আরও জটিল হয়েছে।
তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থায়ন নিশ্চিতে বাংলাদেশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দোহায় কাতার ফাউন্ডেশন আয়োজিত রোহিঙ্গা সংকট ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী বিষয়ে গোলটেবিল আলোচনায় এসব বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল একটি মানবিক সমস্যা নয়; এটি একটি বহুমাত্রিক সংকট, যার সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১৩ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিককে (রোহিঙ্গা) আশ্রয় দিয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক যুক্ত হচ্ছে। নানা চ্যালেঞ্জ ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও শুধু মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশ এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিচ্ছে। বাংলাদেশ মনে করে, এ সংকটের একমাত্র সমাধান হচ্ছে টেকসই প্রত্যাবাসন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুঃখজনকভাবে, রোহিঙ্গা মানবিক সংকট মোকাবিলায় যৌথ সহায়তা পরিকল্পনার (জেআরপি) অর্থায়ন ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। ২০২৪ সালে জেআরপি ৮৫২ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার আহ্বান করা হলেও প্রাপ্ত অর্থ ৬৪ দশমিক ৪ শতাংশ অর্থাৎ ৫৪৮ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার। ২০২৫-২৬ সালের জেআরপি ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ শুরু হয়। এর আওতায় ১৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন মানুষ রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে প্রয়োজন ৯৩৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র তার বিদেশি সাহায্য হ্রাস করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে খাদ্য সহায়তা বন্ধ করতে পারে। তবে, তাৎক্ষণিক অর্থায়ন জোগাড় করে তা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা গেছে। কিন্তু, সেপ্টেম্বর থেকে আবার তহবিল সংকটের আশঙ্কা রয়েছে। অর্থায়ন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। আশা করি কাতার এই দিক থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।