ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে ঋণের ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার বড় ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা ও ভাতিজা শংখজিৎ সিনহা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এরপর তাদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আগামী ১৩ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বিচারপতি সিনহার ভাই-ভাতিজার সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।
মামলার গুরুত্বপূর্ণ দুই সাক্ষী বিচারপতি সিনহার ভাই ও ভাতিজা আদালতকে জানান, সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহার নির্দেশ ও তত্ত্বাবধানে শাহজালাল ব্যাংকের উত্তরা শাখায় দুটি হিসাব খোলা ও সেগুলোতে ঋণের ৪ কোটি টাকা জমা হওয়ার পর সেই টাকা দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিচারপতি সিনহার অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টে থেকেই পরবর্তীতে সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা চার কোটি টাকার মধ্যে দুই কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা স্থানান্তর করা হয়।
সিনহার ভাই-ভাতিজা আদালতে আরও জানান, সেখানে একজন কর্মকর্তা আগে থেকেই সবকিছু তৈরি করে রেখেছিলেন। যাওয়ার পর শুধু তাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর একটি চেকবইয়ের সব পৃষ্ঠায় দু’জনের স্বাক্ষর রাখা হয়। পরে তারা বাড়ি ফিরে যান।
দুদকের আইনজীবী আহমেদ আলী সালাম সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহার বড় ভাই ও ভাইপোর সাক্ষ্যতে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে এসকে সিনহা ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত।
যদিও আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম বলেন, বিচারের এই পর্যায়ে এসেও এখনো সাবেক প্রধান বিচারপতি ঋণ জালিয়াতি করেছেন- এমনটা বলা যাবে না।
গত ১৩ আগস্ট একই আদালত ১১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলা তদন্ত করে একই বছরের ৯ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর গত ৫ জানুয়ারি দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে নিয়ে এসকে সিনহাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক রয়েছেন।