ফখরুল-আব্বাসের জামিন আপিল বিভাগে বহাল
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২৫ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন বহাল রেখেছে আপীল বিভাগ।
রোববার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
গত ৫ জানুয়ারি বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দীন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৬ মাসের অন্তর্র্বতীকালীন জামিন দেয় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে।
এর রায়ের বিরুদ্ধে পরদিনই রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন করলে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়পি সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখেন এবং একই সঙ্গে ওই সময় পর্যন্ত নিম্ন আদালতে জামিননামা দাখিল না করতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি তাদের নিয়মিত জামিন কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে হাই কোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
ফখরুল ও আব্বাসের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপীল বিভাগে শুনানি হয়েছে। আপীল বিভাগ আমাদের কথা শুনেছেন এবং সরকার পক্ষের কথাও শুনেছেন। উভয় পক্ষের শুনে চেম্বার আদালত যে আদেশটি দিয়েছিলেন সেই আদেশটি বেকেট করে দিয়েছেন। এবং আরেকটি আদেশ দিয়েছেন বলছেন যে, রুলটি এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য। সুতরাং হাইকোর্ট বিভাগ যে জামিন দিয়েছেন সেটা বহাল আছে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি আপীল বিভাগের এই আদেশের পাওয়ার পরে আমরা বেইলবন্ড ফার্নিস করব। যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নাই এখন পর্যন্ত কোনো মামলা নাই, আমরা মনে করি বেইলবন্ড ফার্নিস করা সাপেক্ষে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হবে।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনসহ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল,অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলগণ।
বিএনপির দুই নেতার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এএম মাহবুবউদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল ও সগীর হোসেন লিয়নসহ আইনজীবীরা।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ও স্থান নির্ধারণ নিয়ে উতকন্ঠা- উত্তেজনার মধ্যে ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে জমায়েত হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে হাতবোমা ছোড়া হয়েছে অভিযোগ তুলে তখন ওই কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালায় পুলিশ, গ্রেপ্তার করা হয় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাসহ কয়েকশ নেতা-কর্মীকে।
পরদিন রাতে বাড়ি থেকে মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়, একই রাতে গ্রেপ্তার করা হয় মির্জা আব্বাসকেও। ৯ ডিসেম্বর পুলিশের উপর হামলা ও উস্কানি দেওয়ার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয় আদালতে। তাদের পক্ষে জামিন আবেদন হলেও তা নাকচ করে পাঠানো হয় কারাগারে।
সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন, মতিঝিল, শাহজাহানপুর ও রমনা থানায় চারটি মামলা করে পুলিশ। সব মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মীকে আসামী করা হয় সেসব মামলায়।
তাদের মধ্যে ৭২৫ জনের নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছিল, ওই তালিকায় মির্জা ফখরুল বা মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না।
গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করেন মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে তিন দফা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে।