স্বাধীনতাবিরোধীরা এখনো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রয়েছে : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এখনো ছদ্মবেশে টিকে আছে। এদের অনেকে এখন নব্য আওয়ামী লীগার হয়েছে। এমনকি তারা প্রকৃত আওয়ামী লীগারদের চেয়েও জোরে জয় বাংলা স্লোগান দেয়। কিন্তু তারা তাদের সাম্প্রদায়িক আদর্শ ত্যাগ করেনি।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, সুযোগ পেলে আবারও স্বাধীনতাবিরোধীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। তাই আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। কিন্তু মৌলিক চরিত্র তাদের ভেতরে সুপ্ত আছে। সময় হলে তারা সেই চরিত্র নিয়ে হাজির হবে। তাই ১০ জানুয়ারিকে উদযাপন করার সময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষের ঐক্য দরকার।
তিনি বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি হওয়ার পরও বিএনপি অফিসিয়াল রেকর্ড থেকে তাকে ‘সাসপেক্ট’ করেনি। তারা এখনো সুযোগের অপেক্ষায় আছে। যদি সেই সুযোগ পায় বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষকে একদিনে মেরে ফেলবে। দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করবে। মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করেন তাদের অপরাধী হিসেব চিহ্নিত করা হবে। তাদের জেলে পাঠাবে এবং মৃত্যুদন্ড দেবে।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, যখন নির্বাচন সামনে আসে তখন নৌকাকে ঠেকানোর জন্য আওয়ামী বিরোধী ও আওয়ামী লীগ দুটি দল হয়ে যায়। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় নানাজন নানা দল করে, কিন্তু ভোট এলে বাম প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি এক হয়ে যায়। তারা শুধু নৌকাবিরোধী নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। মুক্তিযোদ্ধের চেতনা ঠেকানোই তাদের মূল লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধু বিপ্লবী, জাতীয়তাবাদী, ক্ষণজন্মা নেতা ছিলেন উল্লেখ করে শ ম রেজাউল করিম বলেন, বিপ্লবের ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছিল ছাত্রজীবন থেকে। যে দেশ আমরা পেয়েছি সেই বাংলাদেশের রূপকার ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি যদি ১০ জানুয়ারি ফিরে না আসতেন, তাহলে আমাদের বিজয় অসম্পূর্ণ থাকতো। তিনি যেদিন বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন সেদিন বাংলাদেশ পরিপূর্ণতা পেয়েছিল।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বিনাশ হয় না, কোনো একজন খ্যাতিমানের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে সবকিছু বিনাশ হয় না। বঙ্গবন্ধু একটি বিশ্বাস, দর্শন, আর্দশ, পথচালার পাথেয় ও অবিনাশী সত্তা। বিশ্বের নির্যাতিত, নিষ্পেষিত, নিপীড়িত মানুষ যখনই পথ হারাবে, পথ খুঁজতে হলে বঙ্গবন্ধুর জীবনালেখ্য, তার সংগ্রামী জীবন থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। আলোচনা সভায় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, যখন পাকিস্তানি বাহিনী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করছে, তখনো কেউ জানত না বঙ্গবন্ধুর আসলে কী হয়েছে। তাঁর বেঁচে থাকার জন্য ভারত ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে কৃতিত্ব দিতে হয়। তাদের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই পাকিস্তান তাঁকে মৃত্যুদন্ড দিতে পারেনি।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ড. বিমান বড়ুয়া ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাসহ অন্যরা।