ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা, সাধারণের মতামত নেবে বিএনপি

রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা, সাধারণের মতামত নেবে বিএনপি

রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখা নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামত নেবে বিএনপি। জনমত সাপেক্ষে এসব দফায় সংশোধন-বিয়োজন কিংবা পরিমার্জন করা হবে। এ জন্য একটি কমন মেইল দেওয়া হবে। যেখানে মানুষ দফাগুলো সম্পর্কে নানা মতামত তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। সেখান থেকে মতামত বাছাই করে নীতিনির্ধারকদের দেবে দলের মিডিয়া সেল।

দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, একটি নির্দিষ্ট তারিখ বেঁধে দিয়ে জনমত চাওয়া হবে। এতে আমরা মনে করি, জনসম্পৃক্ততা ব্যাপকহারে বাড়বে। আমাদের রূপরেখায় যেসব পয়েন্ট বাদ পড়ে গেছে তা সংযুক্ত করা হবে। শিল্প-বাণিজ্য জলবায়ু কৃষি ও তথ্য-প্রযুক্তিকে জোর দিতে হবে। এগুলো বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বিএনপি ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচি এবং রাষ্ট্রকাঠামোকে মেরামত করার জন্য ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা হবে।

টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন না করার নিয়ম চালুসহ বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থা বদলে ফেলতে গত ১৯ ডিসেম্বর এই ২৭ দফা কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে বিএনপি, যেটিকে দলটি ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ বলছে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, উচ্চ কক্ষের আইনসভা চালুসহ সংবিধানে গণভোট ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন এবং এক বছর বেকার-ভাতা দেওয়ার কথা বলেছে দলটি।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২৭ দফা নিয়ে কে কী বলল সেদিকে দেখার সময় নেই। এটি চলমান আন্দোলনেরই অংশ। এই ২৭ দফা না করে আপনি রাষ্ট্র চালাতে পারবেন না।

তিনি বলেন, তারেক রহমানের ২৭ দফার পেছনে যে ভাবনাটা, যে দর্শনটা, সেটি আমাদের আন্দোলনের পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে, তাদের মনোজগতে পৌঁছাতে হবে। বিএনপির ২৭ দফা আগামী বাংলাদেশের স্বপ্ন, এটি রংধনুর মতো। এটি সব দল, সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব ভাষা, সব মত- একসঙ্গে মিলে একটি রংধনুর মতো সুন্দর হবে।

তবে গতকাল এক অনুষ্ঠানে ২৭ দফা রূপরেখার একটি বিষয়ে একমত নন বলে জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন না করার যে কথা বিএনপির রূপরেখায় বলা হয়েছে, তা নিয়েই তার ভিন্ন মত।

গয়েশ্বর মনে করেন, ‘নিয়ম যদি তেমনটাই করতে হয়- তাহলে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম হওয়া উচিত। এখানে যে পরপর লেখা আছে- দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না; পরপর প্রধানমন্ত্রীর জন্য বার থাকলে- বাকিরা মন্ত্রী হবেন কেন? আনেন ইকুয়াল প্রিভিলেজ অ্যান্ড ইকুয়াল রাইটস, রেসপনসিবিলিটি সব তুলে দেন। আমি মন্ত্রী হইমু ১৪ বার, প্রধানমন্ত্রী হইব দুইবার; তারপরে চান্স পাইলে হইব। নো নেভার, এগুলো হয় না। নিয়ম আনেন না পার্লামেন্টে দুইবারের বেশি এমপি হতে পারবে না।’

ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন মহানগরে ২৭ দফা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে দলের মিডিয়া সেল। সেলের আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন গণমাধ্যমকে বলেন, ২৭ দফা নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে দেশের বড় বড় মহানগরে সেমিনার করেছি। সমাজের নানা শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমের মতামতও নিচ্ছি। কিছু বিষয় সংযোজন করা হবে। যেমন তথ্য-প্রযুক্তি, পরিবেশ ইত্যাদি।

অন্যদিকে ২৭ দফা রূপরেখা সম্পর্কে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্যাম্পেইন শুরু করেছে বিএনপি। এ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে একটি মিডিয়া হাউসের কার্যালয়ে যান দলটির মিডিয়া সেলের সদস্যরা। সংবাদকর্মীদের সামনে ২৭ দফা রূপরেখার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন তারা। একই সঙ্গে এই রূপরেখার বিষয়ে মুক্ত মতামত দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়। রূপরেখা সংবলিত একটি বুকলেটও তুলে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ২৭ দফার বিষয়ে শরিকদের ফিডব্যাক নেওয়া হচ্ছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে তা আপডেট করবে বিএনপি।

বিএনপি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত