তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি জনগণের জন্য রাজনীতি করে না। তারা রাজনীতিটা করে দুইজনের জন্য, একজন বেগম খালেদা জিয়া, আরেকজন তারেক রহমান। এই দুইজনের জন্যই তাদের রাজনীতি যার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ক্ষমতা দখল করা, সেটি যেভাবেই হোক।’ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রাজপথে দলের কর্মসূচি প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। আমাদের কর্মসূচি সবসময় ছিল এবং থাকবে। আমরা কাউকে রাজপথ ইজারা দেই নাই। বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজপথ দখল করে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে মানুষ পুড়িয়ে, অগ্নিসন্ত্রাস করে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ক’দিন আগে ইউনিয়নে ইউনিয়নে পদযাত্রা করে আমাদের দলের শান্তি সমাবেশের ওপর হামলা করে গাড়ি-ঘোড়া পুড়িয়েছে। তাদের অগ্নিসন্ত্রাসী এবং সন্ত্রাসীদের সেখানে দেখা গেছে, পিস্তল উঁচিয়ে তাদের মিছিলে দেখা গেছে -এগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং আমরা আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগ রাজপথ থেকে উঠে আসা দল। আমরা রাজপথে আছি এবং থাকবো এবং রাজপথে কাউকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না।’
রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপি নেতাদের মন্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি আগে থেকেই রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়বে বলার উদ্দেশ্যটা কি! এখনও তো রমজান আসে নাই, আরো এক মাস বাকি। এতো আগে দ্রব্যমূল্য বাড়বে বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর জন্য উৎসাহ দেওয়া, অসৎ ব্যবসায়িদের, মজুদদারদের উৎসাহ দেওয়া যে তোমরা বাড়াও, বিএনপি তোমাদের সাথে আছে এবং থাকবে। এই উদ্দেশ্যেই তারা কথাগুলো বলছে।’
তথ্যমন্ত্রীর সাথে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
এর আগে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি ম্যাসদুপুই সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘আপনারা জানেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট ফ্রান্সের কোম্পানি সরবরাহ করেছে এবং সেটি কেমন কাজ করছে জানতে চাওয়ায় আমি রাষ্ট্রদূতকে বলেছি যে, দেশের সমস্ত টেলিভিশন চ্যানেল এখন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়। শুরুতে যে, ছোটখাটো কিছু সমস্যা ছিল, সেগুলো এখন নেই। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট খুব ভালো ‘পারফর্ম’ করছে। আমাদের সরকার দ্বিতীয় একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ফ্রান্সের পক্ষ থেকেও সেটির জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফরাসি জাতি আর্ট-কালচারে উন্নত। আমরা বাঙালিরাও শিল্প-সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ জাতি। এ ক্ষেত্রে কিভাবে সহযোগিতা বাড়ানো যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঢাকায় ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট স্থাপনে ফরাসি সরকার সহায়তা করছে। চট্টগ্রামেও ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট নিয়ে সমীক্ষা হচ্ছে, সে ক্ষেত্রেও ফ্রান্স যুক্ত হতে পারে কি না সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
ড. হাছান এ সময় দেশে ফরাসি সহায়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ফ্রান্স ডেভেলমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে, গত এক দশকে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার তারা সহায়তা করেছে। সেই সহায়তার ৭০ শতাংশ ক্লাইমেট রিলেটেড হতে হয়। সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমরা যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার, সে জন্য সেখান থেকে কেমন সহায়তা হতে পারে এবং ফ্রান্সে আমাদের রপ্তানি কিভাবে বাড়ানো যায় এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া সংবাদ, মিথ্যা সংবাদ, গুজব ছড়ানোর প্রতিকারের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেই চ্যালেঞ্জটা তারা ফ্রান্সে যেমন মোকাবিলা করছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন মোকাবিলা করছে, আমরাও এখানে মোকাবিলা করছি, এগুলো নিয়ে পরবর্তীতে আরো আলোচনা হবে।