জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্য আর নেই
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩১ | অনলাইন সংস্করণ
ঐক্য ন্যাপ সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্য না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। রোববার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তার ভায়রা ডা. মানস বসু এ তথ্য জানিয়েছেন।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ জানান, প্রয়াত এই রাজনীতিবিদের মরদেহ রাতেই শমরিতা হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ আমরা সোমবার সকাল ১০টায় হেলথ অ্যান্ড হোপ হসপিটালে বসব। এরপর গণমাধ্যমকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে।”
প্রবীণ রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্য বেশ কিছু দিন থেকে অসুস্থ ছিলেন। সবশেষ নিউমোরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৭ এপ্রিল থেকে ঢাকার পান্থপথের ‘হেলথ অ্যান্ড হোপ’ হাসপাতালে ডা. কামরুল হুদার অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (২২ এপ্রিল) তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।
১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে ১৯৫৯ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন। পঙ্কজ ভট্টাচার্য গত শতকের ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী বাংলাদেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী, একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী ও সংগঠক। ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও পরে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। তিনি ১৯৬৬ সালে ‘স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র’ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারারুদ্ধ হন।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরাম গঠনের সময় তিনি ছিলেন দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। পরে সম্মিলিত ‘সামাজিক আন্দোলন’ নামে দেশের প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক মানুষের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলেন। ২০১৩ সালে তিনি ঐক্য ন্যাপ নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।
রাজনীতির বাইরে তিনি একজন কৃতি ফুটবলার ছিলেন। এ বছরের অমর একুশে বইমেলায় পঙ্কজ ভট্টচার্যের আত্মজীবনীমূলক বই ‘আমার সেই সব দিন’ প্রকাশিত হয়।