তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে সংকট সমাধানে। আওয়ামী লীগ চাইলে সংঘাত এড়িয়ে তত্ত্বাবধায়কের বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে। এজন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তত্ত্বাবধায়কের প্রেসক্রিপশন তো আওয়ামী লীগের ছিল, তারাই বাদ দিয়েছেন। আন্দোলনে চলছে, সামনে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বা নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনে হবে না। সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু আমরা নই, বহির্বিশ্ব যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারাও বলছে- বাংলাদেশের একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন খুব জরুরি। বাংলাদেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য ভবিষ্যতের অগ্রগতি উন্নয়ন সবকিছুর জন্য। কিন্তু এ বিষয়ে তারা আগ্রহী নয়। আবারও আগের মতো ক্ষমতায় থাকার জন্য এককভাবে নির্বাচন করতে চায়। এজন্য সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক যে সংকট তৈরি হয়েছে, এই রাজনৈতিক সংকটকে খাটো করে দেখার কোনো কারণ নেই।
নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে যে রাষ্ট্রপতি শপথ নিয়েছেন জনগণের কাছে তার নামটা একেবারে পরিচিত ছিল না। বর্তমান সংকট কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে মানুষের মাঝে একটি সন্দিহান রয়েছে। তিনি কী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নতুন রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে আমাদের আগ্রহটা কম। কারণ আমরা মূল জায়গাতে যেতে চেয়েছি। আজকে নির্বাচন প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক নয়, নির্বাচন যদি গ্রহণযোগ্য না হয়, আমরা অংশগ্রহণ করতে না পারি, বিরোধী দল অংশগ্রহণ করতে না পারে, একটি নিরপেক্ষ সরকার যদি না হয়, তাহলে সবকিছুই অর্থহীন হয়ে যায়। সে কারণে আমরা তার প্রতি জোর দিচ্ছি বেশি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা একদলীয় সরকারের দিকে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে গিয়েছে। আবারও তারা একইভাবে ১৪ সালের মতো ১৮ সালের মতো নির্বাচন করতে চায়। তাদের লক্ষ্য সেটাই দেখাচ্ছে। পরিষ্কার করে বলছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কোনো আলাপ হবে না। বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো আলোচনা হতে পারে না।
সরকাররের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমস্ত রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করে তারা আবারও আগামী নির্বাচন পার হতে চায়। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নিতে চায়।
নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা কী এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা যাকে চিনি না, যাকে জানি না, যার সম্পর্কে বেশি কিছু বলতেও পারি না; এমন একজন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করা হয়েছে। এটা আমাদের কাছে ক্লিয়ার, পরিষ্কার। এজন্য প্রত্যাশা আমাদের কাছে স্পষ্ট।’