গণতান্ত্রিক চর্চায় বাঁধাদানকারিদের ছবি তুলে রাখুন : আমির খসরু

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৩, ১৯:৩৭ | অনলাইন সংস্করণ

  ময়মনসিংহ ব্যুরো

গণতান্ত্রিক চর্চায় বাঁধাদানকারিদের ছবি তুলে নাম লিখে রাখার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য জননেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এই প্রবীণ নেতা বলেন, আইন শৃংখলা বাহিনীর কোন সদস্য বা আওয়ামী লীগের কেউ যদি গণতান্ত্রিক চর্চায় সভা-সমাবেশে বাঁধা দেয় বা মানবাধিকার লঙ্গন করে তাহলে তাদের ছবি তুলে নাম লিখে রাখুন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দেশেও ব্যবস্থা হবে, বিদেশেও হবে। এদের ভিসা বাতিল করা হবে। শুধু আমেরিকা ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় তা কিন্তু নয় আমরাও গণতান্ত্রিক চর্চায় বাঁধাদানকারিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিব।    

রবিবার (২৮ মে) বিকাল সাড়ে ৫টায় ময়মনসিংহ নগরীর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট মাঠে ময়মনসিংহ উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

এ সময় তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামীলীগ ধংস্ব হয়ে গেছে। এখন আওয়ামী লীগ চালায় কিছু অসাধু পুলিশ, আওয়ামী মার্কা কর্মকর্তা এবং কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ি ও রাজনীতিবিদ। বর্তমানে রেজিম তৈরী করে আওয়ামী লীগ দেশ চালাচ্ছে। এটা কোন সরকার নয়। আগামীদিনে আওয়ামীলীগের পরাজয় সুনিশ্চিত। এই অবস্থায় জুলুম অত্যাচার যত বাড়বে, বিএনপির আন্দোলন তত বেগবান হবে।  

বর্তমানে সারাবিশ্ব বাংলাদেশের নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, জাতিসংঘ, বিশ্ববিবেক, উইনিসেফসহ সকল ধরনের সংগঠন বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে। ভিসা নিষেধাজ্ঞা সাধারণত কোন দেশের নির্বাচনের পরে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার বাংলাদেশের নির্বাচনের সাত মাস আগে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞায় আওয়ামীলীগের খবর হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।    

এ সময় বিদেশিদের কাছ থেকে আওয়ামী লীগ তিনটি চপেটাঘাত খেয়েছে দাবি করে এই বিএনপি নেতা বলেন, এক নম্বরে র‌্যাব কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা, দুই হল- বিশ^ গণতান্ত্রিক সম্মেলনে বিশে^র ১০৭টি দেশকে দাওয়াত দেওয়া হলেও বাংলাদেশকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তৃতীয় হল- ভিসা নিষেধাজ্ঞা। এটা বাংলাদেশের জন্য লজ্জার। এতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।    

জনসভায় মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখবেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন ও শরীফুল আলম।  

এ সময় ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, দক্ষিণ জেলার যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম ও উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা: মাহাবুবুর রহমান লিটন, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ নূরুল কবীর শাহীন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন বাবলু, বিএনপির বৈদেশিক কমিটির সদস্য ইয়াসের খান চৌধুরী প্রমূখ।    

এদিকে বিএনপির জনসভাকে ঘিরে সকাল থেকেই নগরীর অলিগলিতে দলে দলে নেতাকর্মীদের সমাবেশ হতে দেখা গেছে। এরপর দুপুর গড়াতেই হাজার হাজার নেতাকর্মী প্রখর রোদ উপেক্ষা করে জনসভা মাঠে অংশ নেয়।  

অপরদিকে এদিন বিকালে নগরীতে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ। এর আগে সকালে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা আওয়ামীলীগ।

এসব কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু ও সাধারন সম্পাদক মোহিতুর রহমান শান্ত প্রমূখ।

তবে শেষতক কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বিএনপি ও আওয়ামীলীগের পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ সময় শান্তি শৃংখলা রক্ষায় পুলিশের অবস্থান ছিল দৃশ্যমান।