বিএনপি আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে: কাদের

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১৬:৩৪ | অনলাইন সংস্করণ

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি তথাকথিত আন্দোলনের নামে তাদের নেতাকর্মীদের দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। 

বৃহস্পতিবার (১ জুন) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অর্বাচীন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে শত শত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারা দেশের গণতান্ত্রিক সুষ্ঠু পরিবেশ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে উগ্রবাদী অপশক্তির সন্ত্রাসীদের লালন-পালন এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। বিএনপির এসব সন্ত্রাসীবাহিনী জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন করে, অথচ এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই গণমাধ্যমের সামনে তারা ‘বিরোধী দল দমন’-এর বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে বদ্ধপরিকর। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কেউ জড়িত থাকলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আসতে হবে— এটাই সর্বজনীন নীতি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘খালি মাঠে গোল দেওয়ার’ কথা বলেছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময় ধরে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও আইন প্রতিষ্ঠায় নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। বর্বর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী থেকে শুরু করে সামরিক স্বৈরাচারদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাকে অক্ষুণ্ণ রেখেছে আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও খালি মাঠে গোল দেয়নি এবং কাউকে খালি মাঠে গোল দেওয়ার সুযোগও দেয়নি। আমরা সর্বদা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, জনগণই ক্ষমতার একমাত্র উৎস। আওয়ামী লীগ কখনও ষড়যন্ত্র অথবা পিছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেনি।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট আমলের সন্ত্রাস-দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এবং ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তাদের সংঘটিত অগ্নিসন্ত্রাসসহ বিভিন্ন সময়ের সন্ত্রাসীকর্মকাণ্ডের কারণে দায়েরকৃত মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন যাবত চলমান রয়েছে। সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ নয় বলেই প্রচলিত আইন অনুযায়ী দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই মামলাগুলো পরিচালিত হয়ে আসছে।

এতে বলা হয়েছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে বিচারিক প্রক্রিয়াকে চিরাচরিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। বিএনপি একদিকে তাদের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসের পথে ঠেলে দেয় অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিরোধীদল দমনের তথাকথিত অভিযোগ তোলে। একদিকে তারা গণতন্ত্রে আস্থা না রেখে নির্বাচন বানচাল এবং নির্বাচনি ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র করে অন্যদিকে সরকারের উপর তারা দোষ চাপায়। তাদের এই দ্বিচারিতাই বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং বিকাশের প্রধান অন্তরায়।

বিএনপি মহাসচিব ‘গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের’ কথা বলেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস নয়, বরং শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় রাষ্ট্রকাঠামো শক্তিশালী এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠন আইন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনসহ বহুমাত্রিক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে যদি প্রশ্ন করি, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকাশে বিএনপি কী কখনও কোনও ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল?

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে প্রহসনের হ্যাঁ/না ভোটের আয়োজন, ছলচাতুরী ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনমূলক ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০০৬ সালে তাদের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা’র অপমৃত্যু ঘটানো, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টিসহ এমন কোনও অপকর্ম নেই যা তারা করেনি।