বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে মানুষের ভোটের অধিকার নেই। রাজপথে এর ফয়সালা হবে। আওয়ামী লীগ কোনোদিনও ক্ষমতায় থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়নি। তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, এটা কেউ বিশ্বাস করে না।’
রোববার (১৮ জুন) দুপুরে ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। ‘জ্যোতির্ময় খালেদা জিয়া ও দীপ্তিমান তারেক রহমান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ভিসানীতি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেছেন, 'আপনারাও ভিসানীতি করেন দেখি। মূলকথা হচ্ছে জাতি চরম বিপদে আছে। এর থেকে উদ্ধার করতে হবে।'
এর আগে শনিবার এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ভিসানীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ভিসানীতি আমাদেরও থাকতে পারে। আমরাও দিতে পারি। অপেক্ষায় থাকেন। সেই বক্তব্যের জবাব দেন ফখরুল।
বাংলাদেশও ভিসানীতি করতে পারে- এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা এবার আর মানুষকে বোকা বানাতে পারবেন না। রাখাল বালক আর বাঘের কথা আমাদের মনে আছে। এবার আর রাখাল বালকের কথায় কেউ যাবে না। মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে।’
‘বিএনপি বিদেশিদের কাছে যায়’- আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না, বিদেশিরা আমাদের কাছে আসে। জানতে চায়, দেশ কীভাবে চলছে? তোমরা কী বলতে চাও?’
বিএনপি রাজনৈতিক নেতাদের কাউকে খাটো করে না মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘অথচ আওয়ামী লীগ তাজউদ্দিন আহমেদ, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী কাউকেই স্মরণ করে না। আমি বলেছিলাম, বেগম খালেদা জিয়া প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। এটা বলার পর আমার ওপর ঝড় উঠল। বেগম খালেদা জিয়া যদি মুক্তিযোদ্ধা না হন তাহলে মুক্তিযোদ্ধা কে?’
মোড়ক উন্মোচন হওয়া ‘জ্যৌতির্ময় খালেদা জিয়া ও দীপ্তিমান তারেক রহমান’বইটিতে ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে জনসভায় খালেদা জিয়া’ এমন ক্যাপশনের ছবিসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০১৪ সালে তো বিএনপি নির্বাচনেই যায়নি। এটা নির্বাচনী জনসভা হতে পারে না। এটা জনসভা হতে পারে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘এখন কেউ বই পড়ে না। এখন দেখে আর শোনে। প্রযুক্তির কারণে মানুষের চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন হয়েছে। তাই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে গুরুত্ব দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাজমেরী এস ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।