পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে আমরা ঘরে বসে থাকবো না: রেজাউল করীম

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৩, ২০:০৩ | অনলাইন সংস্করণ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, দেশপ্রেমিক-ঈমানদার মানুষ আজ একত্রিত হয়েছে। ক্ষমতাসীন সরকার ও প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্যদের কথা শুনলে মনে হয় তারা ফেরাউনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।  
বাংলাদেশের সর্বমহলের মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছে। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবী করা কোন অন্যায় দাবী নয়। 

তিনি বলেন, সরকার সমর্থকরা লুটপাট করে কানাডায় বেগমপড়া তৈরি করছে। ছাত্রলীগ নেতা হয়ে ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।  সরকারদলীয় লোকেরা লুটপাট করে দেশে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ছে। যারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে আমি তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।  পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ন্যায্য দাবী আদায়ে বিএনপিসহ যারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আহবান করেছেন তাদেরকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে দিতে হবে। 

তিনি বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।  দেশের মানুষের জান, মাল-ইসলাম ঈমানের নিরাপত্তা আজ নেই। জালেম সরকার ক্ষমতায় থাকতে আমরা ঘরে বসে থাকবো না।

আজ বিকেলে পুরানা পল্টনের হাউস বিল্ডিং চত্বরের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই উপরোক্ত কথা বলেন। 

মোড়েলগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বক্তব্য প্রদানকালে পুলিশের বাধা প্রদান ও অসৌজ্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ, ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (P.R) পদ্ধতির প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে  অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে 

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, দেশে একটি সংকট সৃষ্টি হয়ে মারামারির দিকে যাচ্ছে।  অন্যদের ন্যায় আমরাও আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ চাই। বর্তমান সরকার ২০২৪ এর নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে। মানুষের ভোটাধিকার আদায়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।  বর্তমান সরকারের সময়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যার্থতার জন্য শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। 

দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনের কিছু লোকের কর্মকাণ্ড বলে দেয় তারা সম্মানিত মানুষকে সম্মান দিতে পারে না। নির্বাচনে প্রার্থীর উপরে হামলা করে বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের মডেল দেখিয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের ডানা গজিয়েছে ধ্বংসের জন্য।  এই সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত পীর সাহেব চরমোনাই'র নেতৃত্বে আন্দোলন চলতে থাকবে।

প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, মিথ্যা অভিযোগে যারা মানুষকে গ্রেফতার করে তারা জালেম। তিনি বলেন, বিরোধী দলের কোন কোন নেতার বিরুদ্ধে শত শত মামলা দিয়ে রাখা হয়েছে কেন? ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সকল দলের চেয়ে ভালো দল। এই দলে চোর, ডাকাত, দুর্নীতিবাজ নেই। 

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, বিএনপি, আওয়ামী লীগ সমাবেশ করলে আমরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও মাঠে থাকবো। বিএনপি আওয়ামী লীগ শক্তি দেখালে আমরাও শক্তি দেখাবো। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৩৫ বছরে গঠনমূলক রাজনীতি করে দেখিয়ে দিয়েছে।  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল। আগামী ২ মাসের মধ্যে প্রত্যেক থানায় তৃনমুল প্রতিনিধি সম্মেলনের ঘোষণা করেছেন দলের আমীর। আমাদের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা দেয়া হলে রাজধানীতে প্রতিবাদ করবো। প্রয়োজনে আমরা প্রতিদিন রাজপথে নামবো।

সভাপতির বক্তব্যে দলের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, সরকার নিজেদের অধীনে নির্বাচন দিতে চায় না। যে সংবিধান মানুষের ভোটের অধিকার দিতে পারে না সে সংবিধান আমরা চাই না। 

প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কাশেম ও মাওলানা এবিএম জাকারিয়া প্রমূখ।