সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা
৮ দফা দাবি আদায়ে ১৪ অক্টোবর খেলাফত মজলিসের মহাসমাবেশ
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:১২ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনসহ ৮ দফা দাবি আদায়ে আগামী ১৪ অক্টোবর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে খেলাফত মজলিস। গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ’র সাগর-রুনী মিলনায়তনে খেলাফত মজলিস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের এ ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ।
৮ দফা দাবিগুলো হল- ১. দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। ২. নির্বাচনে সবার জন্যে সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ৩. দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ রাখা। ৪. গ্রেফতারকৃত আলেম উলামা ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার করা। ৫. রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের অবাধ সুযোগ নিশ্চিত করা। ৬. দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনদুর্ভোগ লাঘব ও দুর্নীতি নির্মূল করা। ৭. বেকার সমস্যা সমাধান ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকুরীতে নিয়োগ দেয়া এবং ৮. ধর্মীয় শিক্ষা সংকোচন নীতি বন্ধ ও বিতর্কিত পাঠ্যক্রম বাতিল করা।
লিখিত বক্তব্যে আহমদ আবদুল কাদের বলেন, চলমান আর্থ-সামজিক ও রাজনৈতিক সংকট সমাধানে খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৮ দফা দাবী বাস্তবায়ন দেশ-জাতির মুক্তির জন্য অপরিহার্য। বিশেষ করে দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করার মধ্য দিয়ে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও জবাবদিহীমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ লক্ষ্যে আগামী ১৪ অক্টোবর সকাল ১০টায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সফল করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, অব্যবস্থাপনা ও বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ^াস উঠেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে এসে ঠেকেছে। বিদেশী ঋণের বোঝা দিন দিন বেড়েই চলছে। শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গণের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে আমাদের সাংষ্কৃতিক অস্তিত্ব হুমকীর মুখে। বেকার সমস্যা, মাদকাসক্তি, যুব সমাজের মাঝে হতাশা আশংকাজনক অবস্থায় রয়েছে। মানুষের জান মাল ও ইজ্জতের ন্যূনতম গ্যারান্টি নেই।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আরো বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের দমন-পীড়নে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ অস্থিতিশীল হচ্ছে। হত্যা-নির্যাতন, জেল-জুলুম, হামলা-মামলার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রিত বলয়ের মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। বহু আলেম-ওলামাকে গ্রেফতার করে মামলা দিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। নাম পরিবর্তন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ঘষামাঝা করলেও পুরনো নিপীড়নমূলক ধারাগুলো এখনো রয়ে গেছে। এখনও এই আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলকভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড: মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব আবু সালেহীন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু প্রমুখ।