বিএনপির মিথ্যাচার সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ

বিএনপির মিথ্যাচার সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 
তিনি বলেন, বিএনপি যা বলে তার সবই মিথ্যা। মিথ্যা কথায় কেউ কান দেবেন না। মিথ্যা কথায় কেউ বিশ্বাস করবেন না।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্য পাঠে পর তিনি উপস্থিত সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।

জি-২০ সম্মেলন থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে ফিরেছেন’, বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সরকার প্রধান বলেন, ‘বিএনপির এই অভিযোগের কোনও উত্তর দিতে চাই না। আমি শুধু দেশবাসীকে বলতে চাই— বিএনপির নেতারা একটি মাইক হাতে কীভাবে মিথ্যা কথা বলে সেটা সবাই জেনে নেন। মিথ্যা বলাটা তাদের অভ্যাস আর সব কিছুকে খাটো করে দেখার চেষ্টা, এই বিষয়ে যেন দেশবাসী সচেতন থাকে। তারা যা বলে তার সবই মিথ্যা। মিথ্যা কথায় কেউ কান দেবেন না। মিথ্যা কথায় কেউ বিশ্বাস করবেন না— দেশবাসীর কাছে এটা আমাদের আহ্বান।’

বিএনপি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তাদের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে। আর টিকে আছে মিথ্যার ওপরে। তাদের শেকড় তো নেই। তারা মিথ্যার ওপর নির্ভর করে। এটাই করবে। এটা তাদের অভ্যাস।

এসময় সুশীল সমাজের সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, কিছু স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে অনেকে বললেন, মেগা প্রজেক্ট আমরা করেছি। কিন্তু দরিদ্রদের জন্য আমরা নাকি কিছু করিনি। এরকম বক্তব্য শুনলে মনে হয়, তারা বাংলাদেশটাকে দেখেনি। তারা ঘরের ভেতরেই আছেন। আর শুধু টেলিভিশনটাই দেখেন। দিন দুনিয়া তাকিয়ে দেখে না। প্রধানমন্ত্রী এ সময় দরিদ্র বিমোচনসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তার ফিরিস্তি তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সবই তো ভোট চোর। যারা ভোট চুরি করেছে তাদের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনতে হয়। এদেশের মানুষ জানে, নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নতি হয়েছে। মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছে। দারিদ্র বিমোচন হয়েছে। দারিদ্রসীমা ৫ শতাংশে কমিয়ে এনেছি। কেউ ঘরবাড়ি ছাড়া থাকবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে অগ্নিসংযোগ, মানুষহত্যাসহ এমন কিছু নেই তারা করেনি। ২০১৮ সালে নির্বাচনে এসে শেষমেষ তারা সরে গেল।

‘দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তোলে তখন বলতে হয়, ‘সন্দেহ হয় রে’। যারা ভোট পাবে না, যাদের জনসমর্থন নেই। যাদের কোটি কোটি টাকা আছে, তারা বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়ে বেড়াচ্ছে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। যখন দেশে স্বৈরশাসন ছিল, আমরা সংগ্রাম করেছি। নির্বাচন ব্যবস্থার যে সংস্কার। ভোটার তালিকা প্রণয়ন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। এটা আওয়ামী লীগই করেছে। আমাকে শেখাতে হবে না। একটানা আমরা ক্ষমতায় আছি বলেই দেশের উন্নয়নটা সম্ভব হয়েছে।

সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পর ২৯ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এর এক মাস এক সপ্তাহ পর ফের সংবাদ সম্মেলনে করেন সরকারপ্রধান।

জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থান করেন। অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানের সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন শেখ হাসিনা।

এরপর প্রধানমন্ত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন থেকে লন্ডনে যান। সেখান থেকে দেশে ফেরার আগে শেখ হাসিনা বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবর্ধনায় যোগ দেন।

দেশ দুটিতে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে গত বুধবার দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।