বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দেশব্যাপী অবরোধ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) তৃতীয় দিনের মতো চলছে। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের সড়ক, রেল ও নৌপথের অবরোধের শেষ দিন আজ।
গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি-হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং চলমান এক দফা দাবিতে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি-জামায়াত।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ভোর থেকে বিএনপি-জামায়াতের তৃতীয় দিনের অবরোধ শুরু হয়েছে। অবরোধ কর্মসূচির শেষদিনের শুরুতেই সকালে রাজধানীর উত্তরায় বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুনে হতাহতের ঘবর পাওয়া যায়নি।
রাজধানীতে তুলনামূলক কম যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও তবে দূরপাল্লার বাসগুলোকে দেখা গেছে বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান করতে। বেশিরভাগ দূরপাল্লার বাসে যাত্রী নেই। ট্রেন চলছে, তবে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে।
আগের দুদিনে দেখা গেছে, কম হলেও রাজধানীতে বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশা চলেছে। তবে, সারাদেশের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল। গত দুদিনে সাধারণ দিনের চেয়ে সারাদেশে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর টহল ছিল সড়কে।
এদিকে দেশব্যাপী টানা তিন দিনের অবরোধ চলাকালে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। সারাদেশে বিএনপিসহ বিরোধী দলের শত শত নেতা-কর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, অবরোধ চলাকালে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে অন্তত ২১টি অগ্নিসংযোগের খবর পেয়েছেন তারা। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৫টি, ঢাকা বিভাগে ৭টি (সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ), চট্টগ্রাম (কর্ণফুলী, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুণ্ড) এবং রাজশাহী (বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও রংপুর) বিভাগে ৪টি করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
সারাদেশে ১০টি বাস, ৩টি কাভার্ডভ্যান, ৩টি ট্রাক, একটি পিকআপ, একটি মোটরসাইকেল, দুটি বাণিজ্যিক পণ্যের শোরুম ও একটি পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
অবরোধের আগে থেকেই বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের ফটকে পুলিশের ক্রাইম সিনের বেষ্টনী। তালাবদ্ধ কার্যালয়ের ভুতুড়ে পরিবেশ। একদিকে নেতাকর্মীশূন্য বিএনপি কার্যালয়, অন্যদিকে সেখানকার সড়কে যানবাহন চলছে হাতেগোনা। সব মিলিয়ে গোটা দেশের মতো নয়াপল্টন ও যেন তার চিরচেনা রূপ হারিয়েছে সরকারবিরোধী অবরোধ কর্মসূচিতে।
এ ছাড়া অবরোধ কর্মসূচির আগে থেকেই বিএনপির অধিকাংশ নেতা আত্মগোপনে। এর মধ্যে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গ্রেপ্তার হয়েছেন।