আ.লীগের ইশতেহারে কর্মসংস্থান বেশি গুরুত্ব পাবে: আব্দুর রাজ্জাক
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ২২:৫১ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের যুব সমাজকে আকৃষ্ট করতে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের ওপর সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়ে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির আহবায়ক ড. আব্দুর রাজ্জাক।
রবিবার (৫ নভেম্বর) বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নির্বাচন ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির সাথে পেশাজীবীসহ বিভিন্ন কমিউনিটির প্রতিনিধিগণের এক মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা জানান।
নির্বাচনী ইশতেহারে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও দুধ, ডিমসহ পুষ্টিকর খাবারে পিছিয়ে আছি। সেটা আগামীতে দূর করতে হবে। এটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
করোনা ভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারেনি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনীতির কাঠমোটাকে পুনর্গঠন করতে হবে। এটাকে এমন জায়গায় স্থাপন করতে হবে যাতে আগের গতিশীলতা ও জায়গা পুনরুদ্ধার করতে পারি। এ লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা আগাব।
মাথাপিছু আয়, দারিদ্র্য কতটা কমানো হবে সেই পরিকল্পনা ইশতেহারে থাকবে উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখন দারিদ্র্যতা ১৮ দশমিক ৪ নামিয়ে আনছি। এটি কমিয়ে আমরা ১২তে নামিয়ে আসব। অতিদরিদ্র ৯ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনব।
কর্মসংস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, কর্মসংস্থান করতে হলে আমাদের উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা বাড়াতে হবে। এটা বর্তমানে ৩০ শতাংশ থাকলেও আগামীতে ৪০ শতাংশে উন্নতি করতে চায় আওয়ামী লীগ।
সবার আলোচনায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সুশাসনের কথা উঠেছে বলে উল্লেখ করে আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা করবো, সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবো। উন্নয়ন সকলের জন্য করবো। কেউ পিছিয়ে থাকবে না।
সাংস্কৃতিক বিকাশ না থাকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ থাকবে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধরে রাখতে হলে পুরো জনগোষ্ঠিকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে। সংস্কৃতিক বিকাশ ঘটাতে হবে এবং সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে হবে। ধর্মান্ধ ও সাম্প্রদায়িকতা থেকে মানুষকে বের করার জন্য মানুষকে আরও বেশি সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে হবে। আগামীর সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সংস্কৃতির বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ ও কর্মসংস্থান হবে আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য। সেটি হলে আমরা সত্যিকারের অর্থে একটা সমৃদ্ধশালী ও উন্নত জাতি হব সারা পৃথিবীতে। আমরা অহংকার ও গর্ব করে চলতে চাই। নির্বাচনী ইশতেহারের মাধ্যমে আমরা জনগণকে প্রতিশ্রুতি দেব যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম সেটাকে পুনরুদ্ধার করে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাব।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা নির্বাচনের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছি, মূল্যায়নের ভার আপনাদের। নির্বাচনী ইশতেহার যেন জাতির আশা আকাংখার প্রতিফলন হয়। তার ভিত্তিতেই নির্বাচনী ইশতেহার দেবে আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। আওয়ামী লীগ সব সময় গঠনতন্ত্র, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ কখনো চুরাগলির পথে বা অসংবিধানিক পথে ক্ষমতায় আসেনি। গণতান্ত্রিক চর্চা করেছে এবং গণতান্ত্রিক মুল্যবোধ চেতনাকে ধারণ আওয়ামী লীগ পরিচালিত হয়েছে। যে সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেছে সেসকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার তুলে ধরার জন্য সেগুলোর তুলে ধরে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে আওয়ামী যত সাফল্য সেগুলো তুলে ধরছে, তার আলোকে আগামী দিনে আওয়ামী লীগ কি করবে, কি তার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার প্রত্যাশা পূরণ করবে তার কর্মসূচি অর্জনের বাস্তবায়নের কৌশল কি হবে সেগুলো নির্বাচনী ইশতেহার সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে- এ বিষয়ে মূল্যবান মতামত উপস্থাপন করার জন্য উল্লিখিত প্রতিনিধিগণকে অনুরোধ করেন ইশতেহার প্রণয়ণ কমিটির আহ্বায়ক।