আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা আজ
অগ্রাধিকার পেয়েছে স্মার্ট ইশতেহার
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:১২ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করবে। সকাল ১০টায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ইশতেহারের বিস্তারিত তুলে ধরবেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, কর্মসংস্থান বাড়ানোসহ বেশ কিছু খাতে অগ্রাধিকার দিয়ে এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ইশতেহার ঘোষণা করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
দ্বাদশের ইশতেহারে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন সরকারের বদলে যাওয়া দৃশ্যপট রাখা হয়েছে। স্মার্ট ইশতেহারে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, দ্রব্যমূল্য কমানো ও সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা, লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পের প্রসারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা, সাম্প্রদায়িকতা ও সব ধরনের সন্ত্রাস রোধ করা এবং সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার।
এর বাইরেও আওয়ামী লীগ সরকার তাদের চলমান কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় লক্ষ্য স্থির করেছে। যেমন-২০২৮ সালের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হবে ৭১ বিলিয়ন ডলার, ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ৬ শতাংশে নেমে আসবে, ২০২৮ সাল নাগাদ জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮.১ শতাংশে উন্নীত হবে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১৬ শতাংশে উন্নীত হবে এবং প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি হবে ১৪ শতাংশ। ইশতেহারে প্রথমে পটভূমি থাকবে বাংলাদেশের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির বিষয়ে রাজনৈতিক কৌশল। ২০৩১ সালের মধ্যে দেশ থেকে হতদরিদ্রের নিমূল করা। ২০৪১ সাল নাগাদ দারিদ্র্য ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা। এছাড়া শিক্ষিত, দক্ষ, সৎ মানুষদের রাজনীতিমুখী করতেও কর্মসূচি থাকছে এবারের ইশতেহারে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও দলটির প্রেসিডিয়াম ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ইশতেহারে প্রথমে পটভূমি থাকবে বাংলাদেশের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি, বিদেশি শক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্র এবং দেশের মধ্যে যারা বিদেশিদের পা চাটা এদের বিষয়ে কী কর্মসূচি নেবো, কী কৌশল অবলম্বন করবো, কীভাবে মোকাবিলা করব- এগুলো থাকছে। ইশতেহারে আমাদের কিছু অগ্রাধিকার থাকবে- যেমন কৃষি, তরুণ, মাদকসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকছে। বর্তমান দেশি-বিদেশি পরিস্থিতিসহ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা ইশতেহার প্রণয়ন করেছি।
ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব এবং আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ জানান আমাদের অর্থনীতি এবং আর্থিক খাতে সরকার ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। অর্থনীতিকে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে। দেশের অর্থনীতির প্রতিটি খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অনেক কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। সার্বিকভাবে অর্থনীতির গতিশীলতা রক্ষা ও শৃঙ্খলায় গুরুত্ব থাকবে এই ইশতেহারে। ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আরেক সদস্য ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, সুশাসন নিশ্চিতের কর্মকৌশল ইশতেহারে গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হবে। এর বাইরে প্রতিটি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা, প্রযুক্তি সহজলভ্য করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাতে ফলন বৃদ্ধি, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, যাতে কর্মসংস্থানের পথ সুগম হয়, ব্যাংকিং খাতে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, এবারের ইশতেহারে ব্যাংকিংখাতসহ অন্য ইস্যুতে কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা আনা যায়, সেটি আমরা প্রস্তাব করব। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র আরও কীভাবে সুদৃঢ় করা যায়, তার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ সেখানে থাকবে।
জানা গেছে, সেবাখাতে ভোগান্তি বন্ধে তথ্যপ্রযুক্তির অধিক ব্যবহারেরও গুরুত্ব থাকছে এবার। এছাড়া উদ্ভাবনী ও আইডিয়াও গুরুত্ব দেব দলটি। কৃষি খাতে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহারের উল্লেখ থাকবে দ্বাদশের ইশতিহারে।
২০০৮ সালে ‘দিন বদলের সনদ’ শিরোনামে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ইশতেহার দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে দলটি। ২০১৪ সালেও ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ এবং ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে নির্বাচনি ইশতেহার দেয় আওয়ামী লীগ।