আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যা, গ্রেফতারসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরে জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিভিন্ন দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ‘একতরফা’ আখ্যা দিয়ে, নেতা-কর্মীদের ওপর ‘দমনপীড়নের’ অভিযোগ জানিয়ে এ চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি বার্তায় জানিয়েছে, বর্তমান সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুটি বিতর্কিত নির্বাচনের পটভূমিতে আবারও আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে একটি প্রহসনমূলক ও সহিংস কারচুপির নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তথাকথিত এই ‘ডামি নির্বাচনকে’ সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যে নাশকতা চলছে, তাতে শুধু গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই নন, নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষ। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান-কাঠামোতে বিশেষত বাস-ট্রেনে পরিকল্পিত হামলার মাধ্যমে জনগণের জান-মাল ও নিরাপত্তা-স্বাধীনতা বিনষ্ট করছে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ঢাকায় চলন্ত ট্রেনের তিনটি বগিতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং এতে চার যাত্রী নিহত হন। রাষ্ট্রযন্ত্রের একটি চিহ্নিত অংশের যোগসাজশে এই নাশকতা সংঘটিত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন আগেই ১৯ ডিসেম্বর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিশেষভাবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত শয্যা, জরুরি পরিষেবা, ডাক্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। এখানে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, এই নির্দেশনাটি কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়। ডিএমপির এই প্রস্তুতিমূলক উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছিল, নাশকতার সুস্পষ্ট তথ্য ও পরিকল্পনা তাদের কাছে কীভাবে এলো এবং তারপরও এটি রোধে কেন তারা কোনো ব্যবস্থা নেইনি, জনমনে এসব প্রশ্ন রয়েছে।
চলমান অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনায় ‘একটি সুনির্দিষ্ট মাস্টার প্ল্যান লক্ষ্য করা যাচ্ছে’ মন্তব্য করে বিএনপির চিঠিতে বলা হয়েছে, এর একমাত্র বেনেফিশিয়ারি আওয়ামী লীগ ও তার অধীনস্ত রাষ্ট্রযন্ত্র, আর প্রধান ভুক্তভোগী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন শীর্ষ নেতৃত্ব এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ‘কোনো তদন্ত তথ্য বা সূত্র ছাড়াই’ প্রতিটি ঘটনার পর তার দায় ‘অবলীলায় ও একই সুরে’ বিএনপির উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে চিঠিতে।
এ ঘটনা ছাড়াও চিঠিতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরও দশটি অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার ঘটনা উল্লেখ করে তাতে সুনির্দিষ্টভাবে ওই সব ঘটনার সঙ্গে সরকারের যোগসাজশ রয়েছে বলে দাবি করে বিএনপি।