‘শেখের বেটি হাসিনা বলেছিল তিনি পালাতে জানেনা, এখন কোথায়’ প্রশ্ন ফখরুলের
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ | অনলাইন সংস্করণ
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখের বেটি হাসিনা বলেছিল তিনি পালাতে জানেনা আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন এখন তিনি কোথায় ঠিকই পালিয়ে গেছে। সৈরাচারী আচরন করে জেলজুলুম খাটিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়না। এখন আপনারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন। বর্তমান অন্তরবর্তীকালীন সরকারের কাছে আমি আহবান জানাচ্ছি দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা তুলেদিন।
সাবেক পাটমন্ত্রী বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ও গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কৃতিসন্তান প্রায়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আ স ম হান্নান শাহ্’র ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার বিকেলে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক হান্নান শাহ্ পুত্র শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজের সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় এবং কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সহ স্বাস্থ্য সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বাংলাদেশ জামাতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সুরার সদস্য মাওলানা শাফাউল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, মোঃ মুজিবুর রহমান, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন, কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মমতাজউদ্দিন রেনু, গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশির, কাপাসিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জুনায়েদ হোসেন লিয়ন, যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির সরকার প্রমুখ। এ উপলক্ষে হান্নানশাহ্ স্মৃতি সংসদ, তাঁর পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে সকালে হান্নান শাহ্’র রুহের মাগফিরাত কামনায় তাঁর গ্রামের বাড়ি ঘাগটিয়াতে কোরআনখানি, মিলাদ, দোয়া মাহফিল করেন। হান্নান শাহ্ ১৯৪১ সালের ১১ অক্টোবর গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ৭৪ বছর বয়সে গত ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নিজ বাসায় অসুস্থ্য হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ১১ সেপ্টেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরের র্যাফেলস্ হার্ট সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তার হৃদযন্ত্রের অস্ত্রপাচার করা হয়। দীর্ঘ ২১ দিন জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২৭ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।
হান্নানশাহর পিতা ফকির আব্দুল মান্নান ছিলেন পাকিস্তান আমলের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। ১৯৫৬ সালে ঢাকার সেন্টগ্রেগরি স্কুল থেকে মেট্রোকোলেশন পাস এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬০ সালে বিএসসি অধ্যয়ণকালে পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে সামরিক একাডেমি কাকুল থেকে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৮৩ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে থাকাকালীন সময়ে এরশাদ সরকার বাধ্যতামূলক তাকে অবসর প্রদান করেন। হান্নান শাহ্ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কপোর্রেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৮৪ সালে বিএনপিতে যোগদান করেন। তিনি বিএনপির ঢাকা বিভাগিয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন। পরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মনোনীত হন। ১৯৯১ সালে গাজীপুর— ৪, কাপাসিয়া থেকে সংসদ সদস্য নিবার্চিত হন এবং পাট মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে তৎকালীন বহুল আলোচিত ফখরুদ্দিন—মঈন উদ্দিনের সেনা সমর্থীত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গণতন্ত্র বিরোধী কর্মকান্ডের বিরোদ্ধে সর্ব প্রথম মূখ খোলে কথা বলেছিলেন। তখন খালেদা জিয়াকে দেশ ত্যাগ ও শেখ হাসিনাকে দেশে আসতে না দেয়ার ভূমিকার ব্যাপক সমালোচনা করেন। গণমাধ্যমে তখন সরকারের সমালোচনার কারনে বার বার হান্নান শাহ’কে জেলে যেতে হয়েছে। দলের এ ক্রান্তিকালে সক্রিয় ভূমিকার কারনে তাকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত করেন।
হান্নান শাহ্ ছিলেন কাপাসিয়া বিএনপির নেতা—কমীর্দের অভিভাবক এবং সাধারণ মানুষের আপনজন এবং কাপাসিয়ার উন্নয়নের রূপকার। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এলাকার স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়নে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে স্থানীয় শীতলক্ষ্যা নদীর উপর তার নির্মিত ‘ফকির মজনু শাহ্ সেতু স্মরণীয় হয়ে থাকবে।