ফ্যাসিজমের দুঃশাসন মোকাবেলা করেছে ছাত্রসমাজ: মেজর হাফিজ

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২০:৩৩ | অনলাইন সংস্করণ

  ভোলা প্রতিনিধি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেছেন, ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভবিষ্যৎ। ১৯৭১ সালে আমার অধিনে ৫শত ছাত্রদের ট্রেনিং দিয়েছি, তারপর তারা বীরদর্পে কামানের গোলা পেরিয়ে শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে, বহু ছাত্ররা জীবন দিয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর ভেবে ছিলাম এদেশে আর গণজাগরণ হবে না। দুঃশাসনের কারণে এদেশের সাধারণ মানুষ ও ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নেমেছে। এবারের ছাত্রদের হাতে কোনা অস্ত্র ছিলনা, তাদের উপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। গুলি করে প্রায় দুই হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। তাদের অধিকাংশই ছাত্র। ৭১-এ যে ছাত্ররা দেশের স্বাধীনতার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে, বীরদর্পে লড়াই করেছে। আবারও এত বছর পর ছাত্রসমাজ রাস্তায় নেমে এসে ফ্যাসিজমের দুঃশাসন মোকাবেলা করেছে এবং গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশকে উম্মুক্ত করেছে। 

রোববার সকালে ভোলার লালমোহন করিমুন্নেছা হাফিজ মহিলা কলেজে সংবর্ধণা ও নবীন বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।  

করিমুন্নেছা হাফিজ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্বাছ উদ্দিনের সভাপতিত্বে মেজর হাফিজ আরও বলেন, ১৯৭১ সালের আগে আমরা পাকিস্তানিদের একটি কলোনিতে ছিলাম। আমাদের কোনো অধিকার ছিলো না। নির্যাতিত ছিলাম। তখন দেশে গণতন্ত্র ছিলো না। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমাদেরকে অনেক আত্মহুতি দিতে হয়েছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের হাজার হাজার নিরিহ মানুষ যার মধ্যে অনেক ছাত্র ছাত্রীকে হত্যা করেছিলো। এই হত্যা যজ্ঞের প্রতিবাদে অস্ত্রধারণ করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা ছাড়া আমাদের আর কোনা বিকল্প কোনো পথ ছিলো না। তখন আমরা গড়েছিলাম মুক্তি বাহিনী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন এক বীরপুরুষ। যার নাম মেজর জিয়াউর রহমান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি হয়ে গেছে। কারা দেশটাকে স্বাধীন করেছে জনগণকে জানতে দেয়া হয়নি। এটি রাজনীতিবীদরা সুকৌশলে আড়াল করে রাখেন। জাতিকে ধারণা দেয়া হয়েছে কয়েকজন ব্যাক্তির কারণে  এই দেশ স্বাধীন হয়ে গিয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে কেবলমাত্র আত্মদানের বিনিময়ে জীবন উৎসর্ঘ করার বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। অনেক উচ্চমূল্যে আমাদেরকে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস লেখা হয়নি।       

হাফিজ আরও বলেন, একটি জাতিকে উন্নত করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য। 

এদেশের মানুষ শিক্ষিত হলেই তারা  দেশকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাবে। এক সময় লালমোহন একটি অবহেলিত জনপদ ছিল। শিক্ষার দিক দিয়েও পিছিয়ে ছিলো। এ চিন্তা করে এখানে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছি। 

আলোচনার পূর্বে কলেজের শিক্ষমন্ডলী প্রধান অতিথি, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও এডহক কমিটির সভাপতি মেজর হাফিজকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এরপর নতুন শিক্ষার্থীদেরকে ফুলদিয়ে বরণ করেন শিক্ষকমন্ডলী। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. শফিকুল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম আহবায়ক মো. ফরিদ উদ্দিন, সোহেল আজিজ শাহীন, শফিউল্যাহ হাওলাদার, লালমোহন পৌর বিএনপির আহবায়ক সাদেক ঝান্টু, কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীবৃন্দ।