যুক্তরাজ্যের লন্ডনের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি এখন অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।
ঢাকা থেকে লন্ডনে বিএনপি ঘরানার দু’একজন নেতার সাথে ভার্চ্যুয়ালি যোগাযোগ করা হলে বার্তা সংস্থা বাসস’কে তারা এ কথা জানান। তারা সবসময়ই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছেন বলেও উল্লেখ করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার (৮ জানুয়ারি) ইংল্যান্ডের ‘মধ্য-পশ্চিম লন্ডনের’ মেরিলিবন রোডস্থ ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি করা হয়। বিশেষায়িত এই হাসপাতালে তিনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আধুনিক চিকিৎসা-ব্যবস্থা সম্বলিত একটি বিশেষ এয়ারঅ্যাম্বুলেন্সে করে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা থেকে কাতার হয়ে বুধবার বাংলাদেশ সময় ২টা ৫৫ মিনিটে ও স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পৌঁছান বেগম খালেদা জিয়া।
বিমান বন্দরে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কার্যক্রম শেষ হলে সেখান থেকে সরাসরি তাঁকে লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। ক্লিনিকে বিগত সময়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল রিপোর্ট পর্যালোচনার পর প্রফেসর কেনেডির অধীনে তাঁকে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার পর বুধবার দিবাগত মধ্যরাত পর্যন্ত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই-সংগ্রামে সর্বদা আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন লন্ডনে অবস্থানরত তাঁর বড় ছেলে ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
পুত্র তারেক রহমান এবং পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমানের সেবা-যত্নে বাংলাদেশের আপামর জনতার প্রাণপ্রিয় নেত্রী হাঁসিখুশিভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমানের নিজ হাতে রান্না করা খাবার এবং নাস্তা খেয়েছেন।
যুক্তরাজ্য বিএনপি’র একাধিক সূত্রে জানা গেছে বৃহস্পতিবার সকালেও তারেক রহমান মায়ের জন্য বাসায় তৈরি করা নাস্তা নিয়ে ক্লিনিকে যান।
বর্তমানে লন্ডনে বসবাসকারী বিএনপি ঘরানার একজন সাংবাদিক (তিনি ঢাকায় নাম করা একটি জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টার ছিলেন) বৃহস্পতিবার রাতে টেলিফোনে বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার পর ক্লিনিকের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন দলীয় নেত্রীর সফরসঙ্গী ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সময় দেশের এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাঁকে ১৫ বার এ হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল।
ডা জাহিদ জানান, মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা সব সময় মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাডভান্স সেন্টারে তার পরবর্তী চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করেছেন। কিন্তু তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁর বিদেশে উন্নত চিকিৎসার পথ সুগম হওয়ায় তাঁকে লন্ডনে এনে এই ক্লিনিকে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।