ঢাকা শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে মিছিলটি হল পাড়া থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ধরি ধরি না, ধরলে কিন্তু ছাড়ি না’, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করো, করতে হবে’, ‘আওয়ামী লীগের চামড়া তুলে নিবো আমরা’, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই, গড়িমসি চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাইয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যারা গণহত্যার করেছিল এবং মদদ দিয়েছিল সেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে দেখিনি। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, যেই আওয়ামী লীগ দুই হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করেছে, তিরিশ হাজারের বেশি আহত করেছে সেই আওয়ামী লীগের আর রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। অবিলম্বে এই দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে, কোন ধরনের গড়িমসি করা চলবে না।

ঢাবি শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, যে বাংলায় আবু সাইদ প্রাণ দিয়েছে, ওয়াসিম প্রাণ দিয়েছে সে বাংলায় আওয়ামী লীগ থাকতে পারবে না। আন্দোলনে ২ হাজারের অধিক মানুষ প্রাণ দিয়েছে, হাজার হাজার আহতরা এখনো অনেকে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যদি এই সরকার বলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারবে না এর থেকে বড় লজ্জা হতে পারে না। যে বাংলায় আওয়ামী লীগ গণহত্যা করেছে সেখানে তারা থাকতে পারবে না। আমরা তা মেনে নেব না।

তিনি বলেন, শহীদের রক্তের সাথে কোনো চক্রান্ত মেনে নেয়া হবে না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে গণহত্যার দায় মাথায় নিয়ে নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করে জনমত নিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন।

এদিন মধ্যরাতে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা চলছে অভিযোগ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ফিরে আসায় সমঝতা করতে ছাত্র নেতাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কমফোর্ট ইরো’র সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজন করা হবে।’

প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর উত্তাল নেট পাড়াও। ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমাদের চোখের সামনে শহীদের লাশগুলো এখনও জীবন্ত। এত রক্ত, এত কোরবানির পরও যদি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হয় জুলাইয়ের ছাত্রজনতা আবারও রাজপথ দখল করবে।

তিনি আরও লিখেন, যেকোনও মূল্যে খুনি লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ফ্যাসিবাদী রাজনীতি টিকিয়ে রাখার জন্য আবু সাঈদ, ওয়াসিম, শান্ত, আলী রায়হান, মুগ্ধ ও রিয়া গোপরা জীবন দেয় নাই।

বিক্ষোভ,নিষিদ্ধ,আওয়ামী লীগ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত