শীতের ফ্যাশন হিসেবে তারুণ্যের বেশি পছন্দ হুডি পোশাক। বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী বা তরুণরা শীতের পোশাক হিসেবে হুডি পোশাকটাকে বেশি বেছে নিচ্ছেন। কারণ হুডি অন্যান্য পোশাকের তুলনায় একটু হালকা, দামেও কম, ধোয়াতেও ঝামেলা কম হয়। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্যাশন হিসেবে সবাই, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা হুডি পোশাকটা বেশি ব্যবহার করছেন।
ফ্যাশন ডিজাইনার রাকিব হোসাইন বলেন, মানুষ চায় কম ঝামেলায় তার পুরো কাজটা হোক। সে কারণেই অনেকে হুডি গায়ে দিচ্ছেন। কারণ হুডি গায়ে থাকলে তার পুরো শরীরটাই ঢাকা থাকে ও শীত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আর হুডি গায়ে থাকলে অন্য কোনো বাড়তি শীতের পোশাকেরও প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়া হুডি শীতবান্ধবের পাশাপাশি ফ্যাশনবান্ধবও। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের বিক্রয়কর্মীরা বলেন, শীতের জন্য ফ্যাশন সচেতনদের কাছে হুডি বা টুপিসহ পোশাক বেশ কয়েক বছর ধরে ভালোই চলছে। এটি হালের ফ্যাশনও। তাই তরুণ-তরুণীরা বর্তমানে এটি বেশি কেনেন। সেজন্য নানা রঙের, নানা ডিজাইনের হুডি পোশাক বাজারে আনা হয়। বলা যায়, এটি তারুণ্যের শীতের ফ্যাশন। এ ছাড়া শীতের সময় একটা হুডি পোশাক থাকাটা এখন অনেকটা নিয়মের মধ্যে হয়ে গেছে। এটি একই সঙ্গে আরামদায়ক পোশাক, শীতবান্ধর ও সময়ের ফ্যাশন।
ফ্যাশন হাউসগুলো ফ্যাশন সচেতন তরুণ-তরুণীদের কথা ভেবে নানা রং ও নকশার হুডি বাজারে এনেছে। আজিজ সুপার মার্কেটের ফ্যাশন হাউস আর্টিজ্যানসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ও বিভিন্ন মার্কেটে শীতের জন্য হুডি পোশাক এনেছে।
অন্যদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেল জ্যাকেট আর ব্লেজারের মিশ্রণে তৈরি নতুন ধরনের শীত পোশাক এসেছে ছেলেদের জন্য। ছেলেরা এটা বেশ পছন্দ করছেন। পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে পাতলা বা কৃত্রিম চামড়া, কটন, গ্যাবার্ডিন কাপড়ের ব্লেজার বা জ্যাকেট, উলের তৈরি পাতলা নানা রঙের সোয়েটারও। তবে এসব জ্যাকেটে হুডি, বড় আকারের বোতাম, হাতা বা নিচের দিকটায় নানা ধরনের কাটের চল এসেছে। কোনো কোনো জ্যাকেটের সামনের দিকে বোতামের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে চেইন। চাইলে জ্যাকেটের বুক খুলে ভেতরে রঙিন টি-শার্ট পরে বেরোতে পারবেন। এ ছাড়া কটন কাপড়ের প্রিন্ট, অ্যাপলিক করা, চেক, স্ট্রাইপের হাতা ছাড়া ও হাতাওয়ালা ওভেন হুডিস বাজারে বেশ চলছে মেয়েদের জন্য।
জ্যাকেটের পাশাপাশি শর্ট হুডি ব্লেজার, ফুল হাতা হুডি শার্ট ও ফুল হাতা টি-শার্ট কিনছের ফ্যাশন সচেতন তরুণরা। চাইলে এসব হুডি খুলেও রাখা যায় ও আবার শীতের পরও শার্টগুলো পরা যায়। এসব জ্যাকেট, ব্লেজার, সোয়েটার ও শার্ট নানা রঙের চেক, প্রিন্ট ও রঙের আছে। এ ছাড়া এখন কোটির ফ্যাশনে এসেছে পরিবর্তন। প্রিন্স বা রাজপুত্রের মতো নিজেকে সাজাতে অনেকেই পছন্দ করেন এটি। বিশেষ করে ফ্যাশন সচেতন অনেক তরুণ শীতের মৌসুমে নিজেকে প্রিন্সের পোশাকে সাজান। এ প্রিন্সের পোশাক যেমন ফ্যাশনেবল, তেমনি এর মাধ্যমে শীতও নিবারণ করা যায়। ফলে শীত এলে প্রিন্সকোটও বেশি চলে হালের ফ্যাশন হিসেবে। এলিফ্যান্ট রোডের একটি পোশাকের দোকানের বিক্রয়কর্মী জানান, শীত মৌসুম এলে তাদের দোকানে প্রিন্সকোট বেশি চলে। আর এসব কোট বেশি কিনেন তরুণরা।
অন্যদিকে করপোরেট চাকরি করা পুরুষরা দিনে অফিস করতে পারেন ফরমাল ড্রেসের ওপর জ্যাকেট বা ব্লেজার পরে। এসব জ্যাকেট বা ব্লেজারের ওপর উলেন স্কার্ফ বা সিল্কের স্কার্ফ জড়িয়ে নিলে ভালো ফ্যাশন হতে পারে। এ ছাড়া একটু ক্যাজুয়াল থাকতে চাইলে ডেনিমের প্যান্ট বা সেমি ফরমালের সঙ্গে হুডি জ্যাকেট পরতে পারেন। আর যারা পাজামা-পাঞ্জাবি পরেন তারা সঙ্গে শাল পরতে পারেন। কোটি-পাঞ্জাবি ছাড়া শীত উপযোগী স্মার্ট পোশাক হিসেবে স্যুট-টাই বেছে নেতে পারেন। নানা ধরনের কাপড়ের তৈরি স্যুট-টাই বাজারে পাওয়া যায়। চাইলে বানিয়ে নিতেও পারেন।
* পেশাক * প্যাপস * মডেল * নাইফ তাহসিন
* মেকআপ * সোহানা মিতা * আলোকচিত্রী * রাহুল রায় মিসুক