দিন দিন বেড়েই চলেছে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য ডিভাইসের ব্যবহার। আর তাই ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার হয়ে উঠেছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইন্টারনেট মানুষের জন্য যেমন অপরিসীম সুবিধা নিয়ে এসেছে, তেমনি সৃষ্টি করেছে নানা সমস্যা। পৃথিবীর একপ্রান্তের মানুষের সঙ্গে আরেকপ্রান্তের মানুষের সংযোগ সৃষ্টি করেছে ইন্টারনেট। আবার এটিই সবার মধ্যে প্রকৃত সামাজিক সম্পর্কের দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। বড়রা তো বটেই বর্তমানে শিশুরাও আসক্ত হয়ে পড়ছে ইন্টারনেটে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্টারনেট আসক্তি শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের একাগ্রতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের শিক্ষাজীবন। পাশাপাশি কমছে কর্মদক্ষতা। একইসঙ্গে ইন্টারনেট আসক্তির কারণে শিশু কিশোরদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে। এতে তাদের মনের উদ্বিগ্নতা বাড়ছে। বিষন্নতায় ভুগছে অনেকে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, ইন্টারনেটের অধিক ব্যবহারের থেকে যেমন বয়ঃসন্ধিকালীন কিশোর-কিশোরীকে নিবৃত্ত করতে হবে। তারা যেন শুধু প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটেই বিচরণ করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অন্যদিকে সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত প্রাথমিক পাঠটা তাদের আগেই বুঝিয়ে বলতে হবে। বাবা মায়েরা যদি নিজেদের মোবাইলের জগৎ ছেড়ে বয়সন্ধিকালীন কিশোর-কিশোরীকে সময় দিন, তাদের বাস্তব জীবনের বন্ধু হতে চেষ্টা করুন, তবে এই আসক্তি অনেকটা কমবে। শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেট আসক্তি কমাতে কিছু কাজ করতে বলতে পারেন। এমন কিছু কাজ হলো- প্রয়োজন ছাড়া ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট শিশুর হাতে দেবেন না। শিশু যেন সারাদিনে কয়েক ঘণ্টা সময় প্রকৃতির মাঝে কাটাতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রতিদিন সম্ভব না হলেও অন্তত ছুটির দিনে পার্কে বা প্রকৃতিতে নিয়ে যান। বই পড়ানোর অভ্যাস করুন। বয়স উপযোগী বই বা ম্যাগাজিন পড়ার অভ্যাস থাকলে ইন্টারনেট আসক্তি দূরে থাকবে। বাড়িতে পোষ্য রাখতে পারেন। পোষ্য নিয়ে সময় কাটালে অন্যদিকে মনোযোগ কম থাকবে। শিশুর সঙ্গে গল্প করুন। তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন। সমস্যা জটিল আঁকার ধারণ করলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাহায্য নিন।