দুয়ারে ডাকছে বসন্ত

বিদায় নিচ্ছে শীত। গাছের ঝরাপাতা আর আগুনরাঙা পলাশ জানান দিচ্ছে দুয়ারে ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্ত বরণে প্রস্তুত প্রকৃতি। রঙের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে সবার মনে। ক্যালেন্ডারের হিসাবে এবারের ফাল্গুনও আসছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে সঙ্গী করে। বাঙালির ফাল্গুনের প্রথম দিন মিলেমিশে একাকার হবে সারা বিশ্বের ভালোবাসাপ্রিয় মানুষের উৎসবের সঙ্গে। ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস নিয়ে লিখেছেন - মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বেশ কিছু দিন আগেও বাসন্তী রঙের শাড়ি, রঙিন পাঞ্জাবিতেই বসন্তের ছবিটা ফুটিয়ে তোলার আবহটা চোখে পড়ত। কিন্তু সময় পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে বসন্তের পোশাককে ঘিরে নতুন উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। যে উচ্ছ্বাসটা বসন্তের উৎসব আমেজকে দিয়েছে গহন ছন্দময়তা। সেটা হলো বাঙালির আবহমান, চিরন্তন সংস্কৃতিকে নান্দনিকতার শোভায় উৎকীর্ণ করে পোশাকের আদলটা আধুনিক ডিজাইনের শৈল্পিক পঙ্ক্তিতে বুনন করে তাকে ফ্যাশনেবল করে তোলার নিবিড় প্রয়াস। অন্যান্য ঋতুভিত্তিক উৎসবের মতো ঋতুরাজ বসন্তকে বরণের লক্ষ্যেও ফ্যাশন ট্রেন্ডে যেমন শীতের মাঝামাঝি সময় থেকেই চলতে থাকে ব্যাপক প্রস্তুতি। একই প্রস্তুতি মনে মনে লালন করেন নগরবাসীও। প্রাঙ্গণে বসন্ত তাই চলছে এখন বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার তুমুল আয়োজন। আর এ আয়োজনের প্রধান অনুষঙ্গ হলো বাঙালিয়ানাকে অঙ্কিত করা পোশাক। সে পোশাক হোক শাড়ি, থ্রি-পিস, ফতুয়া পাঞ্জাবি, শার্ট কিংবা টিশার্ট। সেই সঙ্গে খোপায়, গলায়, হাতে শোভা পাবে মন উতলা করা প্রাণের গাঁদা, রজনীগন্ধা, গোলাপ ও জুঁই। আর এই বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার আগে থেকেই চলবে শপিংমলের আউটলটগুলোতে ক্রেতাদের উৎসমুখর যাওয়া আসা। পছন্দের পোশাকটি পহেলা ফাল্গুনের আগেই সংগ্রহে রেখে দেওয়া যেন বসন্তের প্রথমদিনের প্রথম প্রহরে নবসাজে সেজে উৎসবে অংশ নেওয়া যায়। আর এদিকটা মাথায় রেখে ফ্যাশনট্রেন্ডও থাকে প্রস্তুত। বসন্তকে ঘিরে অতুলনীয় এই আয়োজন থেকে নগর জীবনের মতো পিছিয়ে নেই মফস্বল শহরগুলোও। রাজধানী ঢাকার মতো মফস্বল শহরের রঙটাও পহেলা ফাল্গুনে বাসন্তী-হলুদ লালে যেন ছেয়ে যায়। বাঙালির চিরায়ত স্বকীয়তা অক্ষুণ্ণ রেখে সবাই বসন্ত বরণে সমবেত হয় গভীর আগ্রহে। বসন্তের আরও একটি বিশেষত হলো- বসন্তেই ঢাকায় আয়োজিত হয় প্রাণের একুশে বইমেলা। বসন্ত এবং বইমেলা যেন নরগজীবনেরও আবেগকে পৌঁছে দেয় এবং অসীম কাব্যিকতায়।